রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪১ অপরাহ্ন

সানন্দবাড়ীতে অসময়ে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন আতঙ্কে নদী পারের মানুষ।

ফরিদুল ইসলাম, দেওয়ানগঞ্জ(জামালপুর)প্রতিনিধিঃ / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪

ফরিদুল ইসলাম, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি: বর্ষায় নদীভাঙ্গন এ দেশের এক চিরাচরিত রূপ। এ সময় নদীপারের মানুষ আতঙ্কে থাকে, কখন জানি নদীর করাল গ্রাস কেড়ে নেবে তাদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ সর্বস্ব। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নদীভাঙ্গনের সেই চিরাচরিত রূপ অনেকটাই বদলে গেছে। শুষ্ক মৌসুমেও এখন নদীভাঙ্গনের আতঙ্ক মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়।
জাতীয় দৈনিক গণকন্ঠ সহ বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে আবার তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের ভাঙ্গনে শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। অন্তত ৭০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনঝুঁকিতে আছে স্কুল, কলেজ, বাজার, মসজিদ, মাদরাসা, রাস্তাসহ শতাধিক স্থাপনা।
মাঘ মাস চলছে। এই সময়ে এমন ভাঙ্গন আগে কখনো দেখেননি বলে জানিয়েছেন ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বয়স্ক ব্যক্তিরাও। জানা যায়, ভাঙ্গনকবলিত সানন্দবাড়ী এলাকাটি অতি প্রাচীন এক জনপদ। সানন্দবাড়ী বাজারটি জেলার মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ বাজার এবং এই বাজারের ইজারামূল্যও প্রায় দেড় কোটি টাকা। যা জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ভাঙ্গনের খুব কাছাকাছি রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই বাজারটি। দ্রুত ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা না গেলে বাজারের অস্তিত্বই হারিয়ে যেতে পারে। এখানে একটি ডিগ্রি কলেজ, বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদরাসাসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। ভাঙ্গনপ্রবণ এই এলাকাটিতে কয়েক মাস আগে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষার প্রবল স্রোতে সেসব জিও ব্যাগ ভেসে গেছে।
দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে ভাঙ্গন চললেও তা রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। পাউবো সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গনকবলিত ৯০০মিটার এলাকায় অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলে তীর প্রতিরক্ষার এই কাজের জন্য ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি প্রস্তাব মহাপরিচালকের দপ্তরের মাধ্যমে অর্থ পরিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অর্থ পাওয়া গেলেই কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া পাঁচ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের জন্যও কাগজপত্র জমা দেওয়া আছে, কিন্তু এর আগেই বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় ঘটে যাবে কি না, তা-ই বা কে জানে!
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়াই বন্যা ও নদীভাঙ্গন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ। কাজেই এ সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য আমাদের নদীগুলো খনন করার বিকল্প নেই, কিন্তু সেটি অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ এবং দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। এর আগে সানন্দবাড়ী এলাকাটিকে অব্যাহত ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর