এলিসন সুঙ,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :
পাকা রাস্তা থেকে প্রায় সাত’শত ফুট উঁচু পাহাড়ি টিলা’য় অবস্থিত জপমালারানী মা মারীয়া তীর্থ স্থানে, খ্রিষ্টভক্তরা ব্যক্তিগত মানত, উদ্দেশ্য প্রার্থনা,পর্বের পর্বকর্তা,অনুতাপ প্রার্থনা,আরাধনা সংস্কার,কালভারীতে ক্রুশের পথসহ এক মাস ব্যাপী জপমালা প্রার্থনা ও নভেনা প্রার্থনা করা মধ্যদিয়ে উদযাপন হলো কাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাম্বলীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জপমালা রাণী মা মারীয়া তীর্থোৎসব।
এবছর জপমালা রানী মা মারীয়া তীর্থের প্রার্থনা মুলসুর হলো “ পবিত্র পরিবার ও খ্রীষ্টিয় সমাজ গঠনে পূণ্যময়ী মা মারীয়া “এই প্রার্থনা মুলসুরকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা অধীনে হরিণছড়া চা বাগান তীর্থ স্থানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে শনিবার ও রবিবার দু’দিন উদযাপন হলো জপমালারানী মা মারীয়া তীর্থ উৎসব।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় ফাদার মৃণাল ম্রং সিএসসি’র পরিচালনায় একঝাক তরুণ-তরুণী নৃত্যশিল্পী পরিবেশন করেন ধর্মীয় গান ও নৃত্য। এরই মধ্যদিয়ে তীর্থের মহা খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়।মহা খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন সিলেট খ্রিষ্টান কাথলিক ধর্মপ্রদেশর বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ। এবং খ্রিষ্টযাগে উপস্থিত থেকে সহযোগীতা করেন শ্রীমঙ্গল কাথলিক মিশনের পালপুরোহিত ড.ফাদার জেমস শ্যামল গমেজ সিএসসি, সহকারী যাজক ফাদার রবার্ট নকরেক সিএসসি,সিলেট ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার চন্দন ব্রাইন রোজারিও,সুনামগঞ্জ রাজাই মিশনের পালপুরোহিত ফাদার জোসেফ তপ্ন,সিলেট খাদিমনগর মিশনের যাজক ফাদার জোসেফ গমেজ ওএমআই, নটরডেম স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ফাদার প্রশান্ত নিকোলাস ক্রুশ সিএসসি ,কুলাউড়া লক্ষিপুর মিশনের যাজক ফাদার সাগর ওএমআই, ফাদার সরোজ কস্তা ওএমআই ,ফাদার পিয়ুস প:ডুয়েং ওএমআই, হবিগঞ্জ শায়েস্তাগঞ্জ সাব-মিশনের পরিচালক ফাদার বিপ্লব কুজুর’সহ আরও উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিশনের ফাদার,ব্রাদার,সিস্টারসহ দু’হাজার অধিক ধর্মীয় বিশ্বাসী খ্রিস্টভক্ত। এই তীর্থোৎসবে তীর্থযাত্রী খ্রিষ্টভক্তরা জপমালা রানী মা-মারীয়া কাছে দেশ ও বিশ্বের শান্তি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করেন।
খ্রিস্টযাগে বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ বলেন ঈশ্বর কুমারী মারীয়াকে বেছে নিয়েছে তার পুত্রের জননী হওয়া জন্যে, মা মারীয়া হলো উদ্বারকর্তা যিশু খ্রিষ্টের মা।জপমালা প্রার্থনা আমাদেরকে আধ্যাত্মিক ভাবে অনেক শক্তি ও সাহস দিয়ে থাকেন। মা মারীয়াকে প্রেরিতগনের রানী বলা হয় কারণ মহান ঈশ্বর তাকে প্রভু যীশু খ্রিষ্টের মা হওয়ার জন্য বেছে নিয়েছেন এবং ঈশ্বর আদেশে কুমারী অবস্থায় গর্ভধারণ করে জন্মদান করেন মুক্তিদাতা যীশু খ্রিষ্টকে।মা মারীয়া প্রতি ভক্তি প্রদর্শন করার জন্যে প্রতি বছর অক্টোবর মাস জপমালা রানী মা মারীয়া মাস হিসাবে ঘোষণা করেছেন। এই মাসে ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্তারা সারা মাসব্যাপী জপমালা প্রার্থনা মাধ্যমে পারিবারিক প্রার্থনা, নভেনা প্রার্থনা করে থাকেন।
তীর্থ উদযাপন কমিটির আহবায়ক ড.ফাদার জেমস শ্যামল গমেজ সিএসসি বলেন এবছর আমরা ৩৪তম জপমালা মা মারীয়া তীর্থ পালন করছি।আজ নানান প্রতিকূলতা মাঝেও মা মারীয়া কাছে ভক্তি প্রদর্শন ও আশীর্বাদ পাবার জন্য এ তীর্থ স্থানে অনেক ভক্ত উপস্থিত হয়েছেন।সকলের উদ্বার সহযোগীতায় কারণে জপমালা মা মারীয়া তীর্থ করতে পেরেছি,তাই সকলকে ধন্যবাদ ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভক্ত বলেন
জপমালা রাণী মা-মারীয়া তীর্থোৎসবে প্রতিবছর অংশগ্রহণ করে থাকি, এবং জপমালারানী মা মারীয়া কাছে মানত করে ব্যক্তিগত আমার উপকার হয়েছে। প্রাকৃতিক ঘেরা সৌন্দর্যময় অবস্থিত হরিণছড়া জপমালারানী মা মারীয়া তীর্থ স্হান,সত্যিই একটি পবিত্র স্থান।