এতে পৌর এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে নালা দিয়ে পৌর এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশনের একটি নালা ধলাই নদে গিয়ে মিশেছে। কিন্তু নদের সঙ্গে যুক্ত নালার মুখে এখনো জলকপাট (স্লুইসগেট) নির্মাণ করা হয়নি। এর ফলে নদে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই নালা দিয়ে পৌর এলাকায় পানি ঢুকেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজানে ভারতের অংশে বৃষ্টি হওয়ায় ধলাই নদে পানি বেড়েছে। নদের পুরোনো সেতুসংলগ্ন এলাকার পানি নিষ্কাশনের নালা দিয়ে পৌর এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে।
এতে পৌরসভার ২, ৫ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চণ্ডীপুর, পানিশালা, কমলগঞ্জ ও শ্রীনাথপুরের আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই এলাকার সড়ক, কমলগঞ্জ থানা, ডাকঘর, কমলগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও আশপাশের বাড়িঘরের এলাকায় পানি ঢুকেছে। এতে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৩০ থেকে ৪০টি ঘরে পানি ঢুকেছে। এসব পরিবারের লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় পানিশালা এলাকার বাসিন্দা মোঃ ফারুক আহমেদ গতকাল রাত্রে বলেন, আমার পশ্চিমের ঘরে হাঁটুপানি, পূর্বের ঘরে গোড়ালি পর্যন্ত পানি ঢুকেছে। পরিবারের শিশুসহ অন্যদের নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছি। নালার কাজ শেষ না হওয়ায় এই পানি ঢুকেছে।
গতকাল বিকেলের সময় পাউবো, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি মিলে নালার মুখে মাটির বস্তা ফেলে প্লাবিত এলাকায় পানি প্রবেশ বন্ধ করেছেন। এতে পানি ঢোকা বন্ধ আছে। কিছু পানি কমেছেও। কিন্তু পানি বের হওয়ার বিকল্প পথ না থাকায় পানি দ্রুত বের হতে পারছে না। পানি নিষ্কাশনের নালাটি নির্মাণ করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সুজন আহমেদ বলেন, হালকা কিছু পানি ঢুকেছে। আমাদের কাজ চলমান। দুটি ড্রেনের আউটলেটে স্লুইসগেট ধরা আছে। স্লুইসগেট করা হবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পাউবো মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল বলেন, ড্রেন নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে মুখ বন্ধ করা উচিত ছিল। ড্রেনের মুখে বস্তা ফেলার পর পানি কমছে। কিন্তু উজানে ভারতে বৃষ্টি হয়েছে, বৃষ্টি হচ্ছে। উজান থেকে সে পানি নামছে। এতে নদে আরও পানি বাড়তে পারে। বৃষ্টি হলেই নদে পানি বাড়বে। নদে পানি বাড়লেই নালা দিয়ে পানি ঢুকবে। দ্রুত নালার মুখ বন্ধ করতে হবে।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ জুয়েল আহমদ বলেন, অতিবৃষ্টিতে এমনিতেই জলাবদ্ধতা আছে। ড্রেনের আউটলেটে স্লুইসগেট দেওয়ার কথা। তিনি প্রায় দুই মাস আগে তিনটা চিঠি দিয়েছেন দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য। স্লুইসগেট নির্মাণ না করায় পানি ঢুকেছে। মেয়র আরও বলেন, ড্রেনের মুখে বস্তা ফেলার পর পানি প্রায় আড়াই ফুটের মতো কমেছে। আমি মাঠেই আছি। ড্রেনের মুখে ধলাই নদের পানি একটু নিচে নামলেই বস্তা তুলে দেব।