সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার গয়হাট্টা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২টি ইউক্যালিপট্যাস গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে স্কুলের পুকুর পাড়ে থাকা এসব গাছ কেটে ফেলা হয়। গাছের মূল শিকড় স্কুলের পার্শ্ববর্তী লোকজনের জমিতে ঢুকে পড়ায় প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে এ সকল গাছ বিক্রি করা হয়েছে। সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা, প্রকৃতি ও পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ায় এ ব্যাপারে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় লোকজন মঙ্গলবার বিকেলেই উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন, উক্ত স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষক কোনরকম সরকারি নীতিমালা না মেনে অবৈধভাবে স্কুলের মূল্যবান গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন।ক্রেতারা গাছগুলো কেটে ফেলেছে। যার আনুমানিক মুল্য ১ লাখ টাকা। গাছগুলো অন্ততঃ ১৫ বছর আগে লাগানো হয়েছিল। তারা আরো জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশ বিনষ্টকারী প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া অনুরোধ জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, গাছ আমাদের বেঁচে থাকার পরম বন্ধু। বিনা বিচারে এভাবে গাছ কাটলে অচিরেই পরিবেশ ধ্বংস হয়ে পড়বে।
এ ব্যাপারে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এসব গাছ স্কুল থেকে লাগানো হয়েছিল। কিন্তু গাছগুলো বড় হবার পর এর শিকড় পার্শ্ববর্তী লোকজনের জমির সীমানায় ঢুকে যাওয়ায় ওই জমির মালিকেরা এসব গাছ কেটে ফেলার জন্য বার বার প্রধান শিক্ষককে তাগিদ দেন। পরে বিষয়টি স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদেরকে জানালে তারা গাছগুলো বিক্রি করে স্কুলের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করার জন্য রেজুলেশন করে দেন। সেই প্রেক্ষিতে ৪৫ হাজার টাকায় গাছগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ আল আমিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি গাছ কাটার কথা স্বীকার করেন। প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যের অনুরুপ কথা বলে তিনি জানান, এসব গাছের অর্থ স্কুলের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। তবে সরকারি নিয়ম মেনে গাছ কাটা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চাননি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ উজ্জল হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি গয়হাট্টা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ের অবৈধভাবে গাছ কাটার ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি আরোও জানান এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম শামছুল হক জানান,স্কুলের গাছ কাটার ব্যাপারে তদন্তের জন্য ইউএনও’র নির্দেশনা পেয়েছেন। দ্রুত তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করা হবে।