শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ অপরাহ্ন

বছরের অর্ধেক মাসেই পতিত থাকে হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি চাষাবাদ হয় একবার।

রিপোটারের / ১৩৫ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৩

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ

নীলফামারীর ডিমলায় বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা হইতে দক্ষিন সুন্দর খাতা পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার বিঘা কৃষি জমি বর্ষা মৌসুমে পতিত থাকে। স্থানীয় কৃষকরা আমন ধান রোপন করতে পারে না। ফলে প্রতিনিয়ত ঐ এলাকার কৃষকেরা অভাব অনটনের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করে। বর্ষার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের উৎসাহ উদ্দীপনার শেষ নেই। কেউ বোরো ধানের বীজতলার পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত আবার কেউ পতিত জমির আইল (মাল্লি) ছাটাই ও সেচ পাম্প দিয়ে পানি তুলে যান্ত্রিক টিলার দিয়ে হাল চাষে ব্যস্ত। পতিত কৃষি জমিতে কৃষকের পরিশ্রমে ফলবে সোনালী ফসল বোরো ধান ।

জানা যায়, বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা হইতে দক্ষিন সুন্দর খাতা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিঃ মিঃ বুড়ি তিস্তার বাঁধটি দেশ স্বাধীনের পূর্বে নির্মিত। ১৯৮৮ সালের প্রাকৃতিক দূয্যোর্গ বন্যার পানিতে কচুবাড়ীর দলার বাঁধের অংশ প্রায় ৬০ মিটার ভেঙ্গে যায়। এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম ও জমির মালিকগনের নিজস্ব অর্থায়নে বাঁধটি এক সময় বাঁধা হলেও পুণরায় উজানের পানির ঢলে ভেঙ্গে য়ায়। তখন থেকে এ অবধি বাঁধটির ভাঙ্গা অংশ দিয়ে উজানের ঢল ও বুড়িতিস্তা নদীর পানি ঢুকে ভুট্টাসহ আমন ও বোরো মৌসুমে রোপনকৃত বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। ৬০ মিটার ভাঙ্গা বাঁধটি সংস্কারের অভাবে এলাকার কৃষকদের প্রায় কয়েক হাজার বিঘা জমি পতিত থাকে বর্ষা মৌসুমে চাষাবাদের অনুপযুক্ত। বাঁধটি মেরামত সহ বুড়িতিস্তা নদী খননের দাবী এলাকাবাসীর।

স্থানীয় কৃষক পাষান আলী জানান, বুড়িতিস্তা নদীর পশ্চিম পার্শ্বের বাঁধটি কিছু অংশ অনেকে আগে বন্যায় ভেঙ্গে যায়, নদীর পানি ঢুকে আমাদের জমিগুলোতে বর্ষা মৌসুমে আমন ধান রোপন করতে পারি না। বোরো ধানের আবাদ ছাড়া কিছুই হয়না জমিগুলোতে “বছরের অর্ধেক মাসেই পতিত থাকে কৃষি জমি একবার হয় আবাদ, সে আবাদ দিয়ে কি আর সংসার চলে ”। জমির মালিক আব্দুল হামিদ জানান, বুড়িতিস্তা নদী খনন ও বাঁধটি সরকারী বরাদ্ধে মেরামত করা হলে পতিত জমিগুলোতে কৃষকেরা আমন-ইরি দুই ফসল উৎপাদিত করতে পারবে, তখন জমিগুলো এক ফসল থেকে দুই ফসলে রুপান্তরিত হবে । এতে এলাকার কৃষকরা উপকৃত হবে। বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, জমিগুলো বৎসরে একবার পতিত থাকে শুধু বোরো ধান চাষ হয়। বোরো ধানের উপর আর নির্ভরশীল না থেকে আমন মৌসুমে যাতে পতিত জমিগুলোতে কৃষকেরা চাষাবাদ করতে পারে সে জন্য নীলফামারী-০১ মাননীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ আফতাব উদ্দিন সরকারের কাছে দৃষ্টি আর্কষন করছি ।

এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সেকেন্দার আলী বলেন, বাঁধটি মেরামত হলে জমিগুলো পতিত থাকবে না তখন আমন ধান রোপন করা সম্ভব। কৃষকেরা নিজেদের খাদ্য চাহিদা মিটেয়ে দেশের জনগনের খাদ্য চাহিদা পুরন করতে সক্ষম হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। সরে জমিনে দেখা যায়, বুড়িতিস্তা নদীর পূর্বপাশ ঘেষা কচুবাড়ীর দলার বাঁধটি সংস্কারের অভাবে মেরামত করা হয়নি। মেরামত না হওয়ায় নিজ সুন্দর খাতা, মধ্যম সুন্দর খাতা, দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামের প্রায় হাজার হাজার বিঘা জমি আমন ধান রোপন করতে পারে না ফলে কৃষকদের জমিগুলো বর্ষা মৌসুমে পতিত থাকে। যার ফলে প্রতিনিয়ত কৃষকেরা অভাব অনটনের মধ্যে মানবেতর দিনাতিপাত করছে।

পতিত জমিগুলোতে বোরো ধান চাষাবাদ করলেও বোরো ধানকাটা মৌসুমে বুড়িতিস্তা নদীর পানি বাঁধটির ভাঙ্গা অংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ে। এতে বোরো ধান কাঁটা মৌসুমে চাষাবাদকৃত পাঁকা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং বর্ষা মৌসুমে মধ্যম সুন্দর খাতা মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যায়লয়টির মাঠ বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ার ফলে বিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বাঁধটি বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ায় সুন্দর খাতা কচুবাড়ীর দলা হইতে খোকসারঘাট ব্রীজের উজানের কৃষি জমিগুলো বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছর পতিত থাকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর