দুই শিক্ষিকার দ্বন্দের বলি ২২ শিক্ষার্থী,তদন্ত কমিটি গঠন।
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মোমিনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ২২ জন শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান ক্লাশে পড়া না পারার অজুহাতে গনহারে বেতাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষিকা জেবুন্নেসার বিরুদ্ধে।এনিয়ে শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।এ ঘটনায় রোববার অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকাকে কারন দর্শানোর নোর্টিশ দিয়েছে বিদ্যালয় কৃতপক্ষ।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে বেতাঘাত করা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।দুই শিক্ষিকার অন্তদ্বন্দে প্রতিশোধ নিতে এ ঘটনা ঘটছে কিনা না অন্য কোন কারনে হয়েছে তা খুজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা।কোনভাবেই প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বেতাঘাত শারীরিক ও মানসিক শাস্তির মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রদানের সুযোগ নাই বলছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
জানা যায়,গত বৃস্পতিবার (১১ আগষ্ট) নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মোমিনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ৪৮ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে বিজ্ঞান ক্লাশে পড়া না পারায ২২ জন ছাত্রছাত্রীদের বেতাঘাত করে আহত করে সহকারী শিক্ষিকা জেবুন্নেসা।এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষিকা মৌসুমি আকতার লিখিত অভিযোগ দেয় উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে।অভিযোগ পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক উদ্দিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি তদন্তের কাজ শুরু করেছে শিক্ষা কর্মকর্তারা।এর আগে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা জেবুন্নেসাকে কারন দর্শানোর নোর্টিশ দিয়েছে বিদ্যালয় কৃর্তপক্ষ।নোর্টিশে তিনদিনের মধ্যে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।কোমলমতি শিক্ষার্থীদের গনহারে ব্রেঞ্চের নিচে মাথা ঢুকিয়ে বেতাঘাত করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।এ ঘটনা জানতে রোববার বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
মোমিনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী,নাহিদ ও রাসেল বলেন,বিজ্ঞান ক্লাশে পড়া না পারায় জেবুন্নেসা ম্যাডাম ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বেঞ্চের নিচে মাথা ঢুকিয়ে বেত দিয়ে বেদম পিটিয়েছে। প্রতিজনকে ৫ থেকে ৭ টা পর্যন্ত বেত্রাঘাত করেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা জেবুন্নেসা বলেন,বিজ্ঞান ক্লাশে পড়া না পারায় তাদের বেতাঘাত করা হয়েছে।এ বিষয় সহকর্মী আরেক শিক্ষিকা মৌসুমি আখতার শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ক্লাশ না করার জন্য উসকানি দিয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
আরেক শিক্ষিকা মোমিনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী আরেক শিক্ষিকা মৌসুমি আকতার বলেন,আমার ফুটবল টিমের শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে জেবুন্নেসা।যাতে তারা বিরতির সময় ফুটবল খেলা প্রস্ততি নিতে না পারে।
মোমিনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম চৌধুরী বলেন,পড়া না পারায় পঞ্চম শ্রেনির বিজ্ঞান ক্লাশের ৪৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ জন শিক্ষার্থীকে বেতাঘাত করেছে সহকারী শিক্ষিকা জেবুন্নেসা।এ ঘটনায় গত রোববার অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা জেবুন্নেসাকে কারন দর্শনোর নোর্টিশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ফারুক উদ্দিন জানান, কোনভাবেই প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বেতাঘাত শারীরিক ও মানসিক শাস্তির মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রদানের সুযোগ নাই। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে।তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হবে বলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন,আমি উপজেলা শিক্ষা কমিটি সভাপতি,বিষয়টি আমি নিয়ে আমি মৌখিক অভিযোগে পেয়েছি। আমি শিক্ষা কর্মকতা ও জেলা প্রসাশককে জানিয়েছি। বিষয়টি প্রমানিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।