প্রথমে টাকা পরে মোবাইল, শেষে জীবন নেই রাজিবের তিন বন্ধু।
রাজশাহীর বাঘায় টাকা ও মোবাইলের জন্য খুন হন সেই রাজিব হোসেন (১৫) নামের এক স্কুল ছাত্র। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাঘা থানার পুলিশ বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করে। এ হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের কাছে এমন তথ্য দিয়েছেন।
জানা যায়,উপজেলার চকছাতারী গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে রাজিব হোসেন ৬ জুলাই দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। তাকে বিভিন্নস্থানে খোঁজ করে পায়নি। ওইদিন বোন চায়না খাতুন বাদি হয়ে বাঘা থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন। এই ডাইরী করার তিনদিন পর কলিগ্রামের পদ্মা নদী থেকে রাজিব হোসেনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন বাঘা থানার পুলিশ।
রাজিব হোসেনের পিতা আবদুর রাজ্জাক লেবারের কাজ ও মা আফরোজা বেগম ঢাকায় গার্মেন্সে চাকুরি করেন। রাজিব বাড়িতে নানির কাছে থেকে বাঘা ইসালামী একাডেমী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপাড়া করে।
কিছুদনি আগে বাবা-মায়ের সাথে কথা বলার জন্য এন্ডয়েড রেডমি ১০ মোবাইল ফোন কিনে দেন। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত রাজিব হোসেনের সাথে তিন বন্ধু কলিগ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে পিয়াল হোসেন (১৫), মাহাবুর হোসেনের ছেলে সৈকত হোসেন (১৫) ও চকছাতারী গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে সবুজ আলী (১৪) এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াতেন।
এক পর্যায়ে সিগারেটখাবে বলে রাজিব পকেট থেকে এক হাজার টাকার একটি নোট বের করে দেয়। তারপর থেকে ওই তিন বন্ধু রাজিবের টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে কৌশলে সন্ধ্যার পর পদ্মা নদীর ধারে যায়। সেখানে গিয়ে রশি দিয়ে স্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মুখের মধ্যে রশি ঢুকিয়ে পদ্মা নদীতে ফেলে দেয়। বাড়ি থেকে নিঁখোজের তিনদিন পর ৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় কলিগ্রামের পদ্মা নদী থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। তারা সবাই পরস্পর বন্ধু বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে তার নানি সুরাজান বেগম বলেন, বাড়িতে কেউ থাকেনা। আমি মেয়ের বাড়িতে থাকি আর নাতি রাজিবকে দেখাশুনা করি। নাতি লেখাপড়াতে ভাল। কিন্তু কোন কোন সময়ে ফোন কিনার পর তার বন্ধুদের সাথে এখানে সেখানে বিকেল হলেই ঘুরতে যায়। অন্যদিনের মতো ৬ জুলাই দুপুরের খাবার খাওয়ার পর বাড়ি থেকে বের হয়। আর ফিরে আসেনা।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রাজিবের কাছে প্রায় ২০ হাজার টাকা ছিল। এই টাকা অন্য বন্ধুরা দেখে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। এ হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারকৃত তিনজন শিশু আমাদের কাছে এমন তথ্য দিয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের তথ্য অনুযায়ী ফেলে দেওয়া ফোন নারায়নপুর বাজারের পুকুর থেকে ডুবুরি নামিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত উদ্ধারের চেষ্টা চলছিল।