ওসমানীনগরে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার অপপ্রচারের অভিযোগ।
সিলেটের ওসমানীনগরে বন্যার্তদের আশ্রয়ের নামে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার উমরপুর ইউনিয়ন এলাকায় ঘটনা না ঘটে। বানবাসী কয়েকটি পরিবারকে আশ্রয় প্রদানের মাধ্যমে ভুইফুড় অনলাইন মিডিয়াকে ডেকে নিয়ে চার শতাধিক লোকজনকে আশ্রয় দিয়েছেন বলে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদকে জড়িয়ে বিএনপি নেতার অপপ্রচার নিয়ে জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে,অবিরাম বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ওসমানীনগরের উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের অধিকাংশ লোকজন বন্যাক্রান্ত হয়ে পড়লে উপজেলা বিএনপি নেতা উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী হিসাবে বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দী হিজলশা গ্রামের আব্দুল হেকিম তাঁর নিজ বাড়ির ২য় তলায় কয়েকটি পরিবারকে আশ্রয় দিয়ে নিজ উদ্যোগে রান্না করা খাবারের আয়োজন করেন।
এ বিষয়ে একাধিক নামধারী সাংবাদিকরা তাদের ভূইভুড় ফেইসবুক পেইজের লাইভে এসে আব্দুল হেকিমকে উমরপুর ইউনিয়নের জনতার চেয়ারম্যান আখ্যা দিয়ে হেকিমসহ তাঁর বাড়িতে আশ্রয় নেয়া একাধিক ব্যাক্তিদের সাক্ষাতকার গ্রহন করেন। ওই সাক্ষাতকারে দাবি করা হয় আব্দুল হেকিম চেয়ারম্যান না হয়ে তাঁর বাড়িতে চারশতাধিক লোকজনকে আশ্রয় দিয়ে তাদের খাবারসহ সার্বিক ব্যায় বহন করছেন অন্যদিকে বর্তমান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা বানবাসী লোকজনকে ত্রানতো দূরের কথা পানিবন্দিদের ইউনিয়নের ভিতরে আশ্রয় দিতেও রাজি হচ্ছেন না। আশ্রয় নেয়ার জন্য কয়েকটি পরিবার ইউনিয়ন পরিষদে গেলে ইউনিয়নের চৌকিদার তাদের বের করে দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মেইন গেইট তালাবদ্ধ করে রেখেছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদের পাশ্ববর্তী আব্দুল হেকিমের বাড়িতে বন্যার্তরা আশ্রয় নেয়ার পর থেকে তিনি আশ্রয়দাতা হিসাবে আশ্রিতদের যাবতীয় ব্যায়ভার তিনি বহন করছেন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের পর খোঁজ-খবর নিয়ে অনেকেই জানতে পারেন, আব্দুল হেকিমের বাড়িতে চার শতাধিক লোজনকে আশ্রয় দেয়া হয়নি। তার অনুগত কয়েকটি পরিবারকে জায়গা দিয়ে নিজের জনবান্ধবতা বাড়াতে ফেইসবুক পেইজের লাইভে এসে উমরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদকে জড়িয়ে নানা অপপ্রচার চালিয়েছেন।
খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা সড়েজমিনে গিয়ে দেখতে পান চারশতাধিক নয়, ১৫/২০টি পরিবারের ৪০/৫০জন লোক আব্দুল হাকিমের বাড়ির ২য় তলায় আশ্রয় নিয়েছেন। এবং আশ্রয়ের পর থেকে আব্দুল হেকিম নিজ অর্থায়নে তাদের খাবারের ব্যবস্থাসহ যাবতীয় ব্যায়বার বহন করছেন বলে আশ্রিতারা নিশ্চিত করেন। উমরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ফখরম্নল ইসলাম খান ও যুবলীগ নেতা লিমন মিয়াসহ অনেকেই জানান, বিএনপি নেতা আব্দুল হেকিম সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি নিজেকে জনবান্ধব সাজাতে নিজের অনুগত ৩০/৪০জন লোকজনকে জড়ো করে ইউনিয়নের টানা দুইবারের সুনামধন্য চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া ও ইউনিয়ন পরিষদ তালাবদ্ধ বলে অপপ্রচার চালিয়েছেন।বন্যার্তদের আশ্রয়ের নামে বিএনপি নেতার এমন অপপ্রচারে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টির সুষ্ট তদন্ত্মপূর্বক ফেইসবুক পেইজের লাইভকারীসহ জড়িতদের বিরম্নদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের সংশিস্নষ্টদের আহব্বান জানান তারা। উমরপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক আখলুসহ একাধিক সদস্য বলেন,বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়ার সার্বিক দিক নিদের্শনায় বন্যার শুরম্ন থেকে ইউনিয়ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে সবরখমের সহযোগিতা করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। যাদের গৃহ পানিতে নিম্নজ্জিত হয়েছে তাদেরকে নিরাপদে আশ্রয়ন প্রকল্পে প্রেরনসহ ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিদিন রান্না করা খাবার প্রদান করা হচ্ছে।
ইউনিয়ন এলাকায় সরকারীভাবে কয়েকটি আশ্রয়ন কেন্দ্রে ব্যবস্থা করারপরও একটি চক্র সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে সস্ত্মা জনপ্রিয়তা খুঁরাতে পরিকল্পিতভাবে লোকজনকে জড়ো করে আশ্রয়ের নামে ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কক্ষগুলোতে লোকজনের থাকার জায়গা দেয়ার অনৈতিক দাবি তুলে। এসময় সরকার কর্তৃক বিধি-নিষেধ থাকায় দ্বায়িত্বরত গ্রাম পুলিশ তাদের ইউনিয়নের অফিস কক্ষগুলোতে লোকজনকে জায়গা না দিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বিএনপি নেতা আব্দুল হেকিমের বাড়িতে জড়ো করে লাইভে এসে জনপ্রতিনিধিসহ ইউনিয়ন পরিষদে জড়িয়ে নানা অপপ্রচার চালানো হয়। যা খুবই দুঃখ জনক। তবে এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আব্দুল হেকিম বলেন,কারো প্রতি আমার কোনো প্রতিহিংসা নেই। ইউনিয়নে সাধারণ জনগনের ভালবাসায় প্রবল বন্যায় ইউনিয়নের লোকজন যাতে ক্ষতির সম্মুখিন না হন এবং তাই মহান আলস্নাহ সানিধ্ধ্য লাভে নিজের প্রবাসের যাওয়ার ঠিকেট কেন্সেল করে ৪০/৪৫টি পরিবারকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্ঠা করছি।
আমি প্রচারবিমুখ মানুষ সাংবাদিকের দিয়ে এসব প্রচার করাতেও চাইনি এরপরও স্থানীয় অনলাইন মিডিয়া এখানে এসে লাইভ করেছে। সেখানে আমি চেয়ারম্যান-মেম্বারকে জড়িয়ে কোনো বক্তব্য দেইনি। কারন চেয়ারম্যান মেম্বাররা উনাদের জায়গা থেকে ইউনিয়নের বানবাসী মানুষের জন্য যা পারেন করতেছেন। আমিও আমার অবস্থান থেকে ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের পাশে থাকার চেষ্ঠা করছি। উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মো: গোলাম কিবরিয়া বলেন,আমি ব্যাক্তিগত কাজে সল্প সময়ের জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেছিলাম।
বন্যার পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্যগনের মাধ্যমে আমি সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে পানিবন্দি লোকজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে এসে তাদের খাবারের ব্যবস্থা অব্যাহত রেখে তড়িগড়ি করে দেশে চলে এসেছি। কারন উমরপুর ইউনিয়নের সকল শ্রেনী পেশার লোকজনই আমার আপনজন,তাদের কল্যানই আমার মঙ্গল। কিন্তু একটি চক্র প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে বন্যার্তদের আশ্রয়ের নামে আমার বিরম্নদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে যা খুবই কষ্টকর। তারপরও এসব বিষয়ে কারো প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ বা হিংসা নেই। আসুন সকলে মিলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সম্মেলিতভাবে ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের পাশে দাঁড়াই। ইউনিয়নের বানবাসী মানুষের ক্ষুতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামানা করেন।