ত্রাণের জন্য হাহাকার,পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ।
ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমন অবস্থায় জরুরী আশ্রয় কেন্দ্র্রে উঠছেন পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দারা। আত্মীয়স্বজন বা পরিচিতজনদের উচুঁ বাড়িতে বা বহুতল ভবনে আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকেই। আর যারা কোথাও যাওয়ার জায়গা পাচ্ছেন না, তারা ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। কিন্তু সরকারি সহায়তা না পৌঁছায় আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা ভুগছেন খাদ্যসংকটে। গত ৪ দিন ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ত্রাণের জন্য অপক্ষোয় রয়েছেন পানিবন্দি মানুষ। রবিবার সকাল পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোন ত্রান সহায়তা বন্যাক্রান্তদের হাতে পৌছায়নি। উপজেলার উচুঁ স্থানে সরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র খোলার তাগিদ দিচ্ছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির হচ্ছে।
কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডাইকের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের সবকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম দূূর্ভোগ পেয়াচ্ছেন প্রায় লক্ষাধিক বাাসিন্দারা। বেশিরভাগ আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরও পানিতে তলিয়ে গেছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। অব্যাহত পানিবৃদ্ধিতে উপজেলার উমরপপুুর, সাদিপুুর, গোয়ালাবাজার ও পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নেরর সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বাকি ইউনিয়ন গুলার বেশির ভাগ এলাকার মানুষও রয়েছেন পানিবন্দি। ফলে পানি বন্দি মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে ত্রাণের সংকট। বন্যার পানিতে টিউব ওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুসারে, বন্যাক্রান্তদের জন্য ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে গত তিন দিনে ৭২৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলায় বন্যাক্রান্তদের জন্য ৮ টন চাল ও নগদ ১ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে সরকার। গতকাল রবিবার উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এই বরাদ্ধ বন্ঠন করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে নিশ্চিত করেছে। তবে, বাস্তবে বন্যাক্রান্ত পরিবারের সংখ্যা আরো বেশি বলে স্থানীয় সূত্রে নিশ্চিত করেছে। কয়েকেটি বহুতল ভবনেও বন্যাক্রান্ত সাধারণ মানুষকে আশ্রয় নিতে দেখে গেছে। তবে এর নির্দিষ্ট কোন তথ্য উপজেলা প্রশানের কাছে নেই।
উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের শাহিন মিয়া বলেন, বন্যার পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪ দিন থেকে পরিবার নিয়ে দূর্ভোগে রয়েছি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আশ্রয়কেন্দ্রই যেতে হবে। ঘরে যা খাবার ছিলো তা শেষ। সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা চেয়েছেন তিনি। শাহিনের মতো পানিবন্দি অনেকেই সরকারি বা বেসরকারী উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা চাচ্ছেন।
উমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মারতি নন্দন ধাম জানিয়েছেন, উমরপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা বন্যাক্রান্ত রয়েছে। ত্রাণ সহায়তার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়ছে।
তাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক বলেন, তাজপুর ইউনিয়নের ৬৫ ভাগ এলাকা পানিবন্দি রয়েছে। আমার নিজ উদ্যোগে বন্যাক্রাদের মধ্যে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করছি। সরকারি ত্রাণ হিসাবে তাজপুর ইউনিয়নে একটন চাল এসছে জেনেছি। তা সঠিক ভাবে বন্ঠন করা হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি রায় বলেন, সরকারি উদ্যোগে ৮টন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা ত্রান সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রানের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।