তানোরে নকল নবিশ বেকায়দায় ফেলে টাকা আদায় করা তাদের কাজ
তাদের ভয়ংকর বললে খুব একটা ভুল হবে না, তারা দুজন মিলে বিভিন্ন ভাবে কলিকদের বা সহপাঠীদের ব্ল্যাক মিল করে লাখ লাখ টাকা আদায় করায় তাদের অন্যতম পেশা বলে মনে করছেন সহপাঠীরা। এই তো কিছুদিন আগে এক সহপাঠীকে বেকায়দায় ফেলে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করেছে। ঘটনাটি একেবারেই গোপন ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।
রাজশাহীর তানোরে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবিশে কর্মরত হাসিনা ও শাকিলা। তারা গত মাসের শেষের দিকে তাদের সহপাঠী বেলালকে ফাঁদে ফেলে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করেছে।
এঘটনা প্রকাশ পেলে নকল নবিশ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক সাব রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ওই দুই মহিলা সহ বেলালের নামে। এর প্রেক্ষিতে সাবরেজিস্টার তৌহিদুল ইসলাম তাদেরকে সাসপেন্ড করে রেখেছেন। কিন্তু তারপরও দেদারসে অফিস করছেন তারা। ফলে এদুই মহিলাকে নিয়ে চরম আতঙ্কে আছেন অন্য সহপাঠীরা।
জানা গেছে, গত মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে দুই মহিলা নকল নবিশ হাসিনা ও শাকিলা চাপাইনবয়াবগঞ্জ জেলা সদরে ডাকে পুরুষ নকল নবিশ বেলালকে। তাদের কথা মত বেলাল চাপাইনবয়াবগঞ্জ যাওয়া মাত্র বিয়ের চাপ দেন ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিতে চান। কিন্তু বেলাল রাজি না হলে তাকে ওই ভয়ংকর দুই মহিলা মারপিট সহ জামা প্যান্ট ছিড়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন, নচেৎ জেলে দেওয়া হবে।
এঅবস্হায় ছিরা সার্ট প্যান্ট পড়া অবস্থায় রাজশাহীতে এসে সালিশ বিচার হয়। সালিশে বেলালের কাছ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। সালিশ করেন শাকিলার নামধারী দোলাভাই মুহুরী আলিম, বেলালের দোলাভাই এরাজ ও ভবানিগন্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসের এক কর্মকর্তা।
এক নকল নবিশ জানান, কোন ঘটনা বা সম্পর্ক হতেই পারে তাই বলে মারপিট করে টাকা আদায় এটা কেমন কথা। সহপাঠীর সাথে এমন আচরণে আমরা যারা আছি সবাই তাদর ভয়ে আতঙ্কিত। কখন কার ঘাড়ে ভর করবে বলা মুসকিল।
আরেক জন জানান, বেলাল মিনমিনা, কাউকে কোন কথা বলতে চায় না। শাকিলার সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে করতে চান। সেদিন চাপায়ে বিয়ে করার কথা ছিল, না করার কারনেই নাকি মারপিট সহ টাকা আদায় করে।তবে সহপাঠীর সাথে এমন আচরণ অমানবিক।
নকল নবিশ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর জানান, এদুই মহিলার চলাচল ভয়ানক। আমরাও জানতাম না ঘটনা। পরে জরিমানা মারপিটের ঘটনা জানার পর স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। যার কারনে তাদের কে সাসপেন্ড হয়ে আছে। তাহলে অফিস কিভাবে করছে জানতে চাইলে তিনি জানান এটা কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। আমরাও চায় এঘটনার সঠিক বিচার হোক এবং সহপাঠীর কাছে কেন এত টাকা আদায় করা হল। তদন্ত সাপেক্ষে টাকা ফেরতের দাবিও করছি আমি সহ অন্যরা। নচেৎ এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না কে বলতে পারে।
অভিযুক্ত বেলালের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার যা হওয়ার হয়ে গেছে, এসব নিয়ে কথা বলতে পরব না।হাসিনা ও শাকিলা নামের দুই নকল নবিশের কাছে ঘটনায় বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোন কথাই বলতে নারাজ।
সাব রেজিস্ট্রার তৌহিদুল ইসলাম সাসপেন্ডের কথা স্বীকার করে জানান, আমি যে দিন অফিস করি তাদের কে দেখিনা। তবে যদি অফিস করে থাকেন ব্যবস্হা নেওয়া হবে।