ওলামা সম্মেলনে বাধার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, আইম্মা পরিষদের দাবী ও কর্মসূচি।
কথিত ‘গণকমিশন’ কর্তৃক দেশের সম্মানিত ১১৬ জন আলেম ও ১০০০ মাদরাসার বিরুদ্ধে বানোয়াট শ্বেতপত্র এবং ইসলাম ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক ওলামা সম্মেলন আয়োজনে প্রশাসনিক বাঁধার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
.
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু আলা রাসুলিহিল করীম, আম্মাবাদ।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে।
আপনারা জানেন, গত ১২ মার্চ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি কর্তৃক গঠিত কথিত গণকমিশন একটি শ্বেতপত্রের মোড়ক উন্মোচন করেছে। ১২ মে সেই শ্বেতপত্রের ভিত্তিতে দুদকে তারা নালিশও করেছে। ঘাদানিকের সেই শ্বেতপত্রে ভিত্তিহীন, বিদ্বেষপূর্ণ মিথ্যাচার করা হয়েছে। ভুল তথ্য ও ব্যাখ্যা হাজির করা হয়েছে। ইতিহাসের বিকৃতি করা হয়েছে। দেশের সম্মানিত নাগরিকদের মানহানি করা হয়েছে। দেশের কোটি মানুষের চর্চিত আচারকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। স্বভাবতই যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
একই সাথে যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে, তাদের অধিকার রয়েছে সেই মিথ্যাচারের জবাব দেওয়ার।
জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ওলামাদের সম্মিলিত মঞ্চ হিসেবে এই মিথ্যাচারের জবাব দেওয়ার লক্ষ্যে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে। আমরা গত ১৬ মে সংবাদ সম্মেলন করে শ্বেতপত্রের আইনী ও নৈতিক ভিত্তিহীনতা তুলে ধরেছি। গত ২৮ মে নাগরিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে এ বিষয়ে নাগরিক বিশ্লেষণ জাতির সামনে তুলে ধরেছি। সর্র্বশেষ শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা ওলামাদের মুখ থেকে উত্থাপিত মিথ্যাচারের উত্তর জাতির সামনে তুলে ধরতে আজকে ওলামা সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল।
জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ শ্বেতপত্রে উল্লেখিত আলেমদের মধ্যে যারা কারাবন্দি নয় এমন সকল আলেমের সাথে সমন্বয় করেছে এবং তারা সকলে এই সম্মেলনে উপস্থিত থেকে শ্বেতপত্রের মিথ্যাচারের উত্তর দিতে প্রস্তুতি নিয়ে ছিলেন।
যেসব মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাদের অধিকাংশের প্রতিনিধিগণ ওলামা সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সামগ্রিকভাবে শ্বেতপত্রে যাদের দিকে অভিযোগের তীর ছোড়া হয়েছিল এমন সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে এক অভূতপূর্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছিল।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
সংবিধানের ধারা ৭(ক)-এ জনগণকে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক বলা হয়েছে। ধারা ৩৭ এ প্রত্যেক নাগরিককে সভা সমাবেশ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে।
ধারা ৩৯ এ সকল নাগরিককে কথা বলার অধিকার দেওয়া হয়েছে। এসব সাংবিধানিক অধিকার বলে এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের চিরন্তন নীতি অনুসরণে শ্বেতপত্রে যে সব আলেমের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে তাদের কথা বলা, সম্মেলন করা খুবই যৌক্তিক কর্মসূচি ছিল।
কিন্তু দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, আমরা সভা-সমাবেশ, সম্মেলন করার সকল নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা সত্ত্বেও একেবারে শেষ মুহূর্তে আমাদের সম্মেলন করার পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। আমরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশনে হল বুকিং দেওয়া সহ যথাযথ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া অনুসরন করেছিলাম। কিন্তু শেষ মুহুর্তে তা বাতিল করা হয়। এর পরে আমরা গতকাল তাৎক্ষনিক জাতীয় প্রেসক্লাবেও হল বুকিং করি। কিন্তু ঘন্টাখানেকের মধ্যেই তা বাতিল করা হয়।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
আমরা জানি, জাতীয় প্রেসক্লাব মতামত প্রকাশের একটি উন্মুক্ত স্থান। কিন্তু সেখানেও কোন এক অশুভশক্তির কুটচালে আমাদের সম্মেলনকে বাধাগ্রস্থ করা হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের মত একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এধরণের আচরনে আমরা ব্যাথিত ও বিস্মিত।
স্বাধীনতার ৫১তম বছরে এসে সংবিধানের এমন লঙ্ঘন ও মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় আমরা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
আধুনিক জাতি রাষ্ট্রে বিভিন্ন নাগরিক বর্গের মধ্যে চিন্তা-চেতনার মধ্যে ইতিবাচক-নেতিবাচক মিথস্ক্রিয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এখানে রাষ্ট্রের কর্তব্য হলো, পরস্পর বিরোধী চিন্তার মধ্যে যেন সংঘর্ষ না বাঁধে তা নিশ্চিত করা। কারো মানহানি না হয়, তা নিশ্চিত করা এবং সকল বর্গের জন্য সুযোগ সমান রাখা। এটা জাতি রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলক নীতি। আমরা তীব্র বেদনার সাথে বলতে বাধ্য হচ্ছি, বাংলাদেশ সরকার এই সর্বজনবিদিত নীতি রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি নির্লজ্জভাবে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে। ঘাদানিক দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও দেশের সবচেয়ে বিস্তৃত সামাজিক প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা এবং দেশের সার্বজনীন সংস্কৃতি ওয়াজ মাহফিলের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন বিদ্বেষপূর্ণ মিথ্যাচারে ভরপুর শ্বেতপত্র প্রকাশ করল। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল মন্ত্রী তার মোড়ক পর্যন্ত উন্মোচন করলেন।
কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হলো, তাদেরকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের সম্মেলন করতে দেয়া হচ্ছে না। এরচেয়ে নির্লজ্জ পক্ষপাত ও বিদ্বেষমূলক আচরন আর কি হতে পারে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
শ্বেতপত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সংবিধানে বিসমিল্লাহ সংযোজনকে সাম্প্রদায়িকতার উৎস বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রধান সমস্যা ভোটাধিকার হরণ, নাগরিক পরাধীনতা, দরিদ্রতা, জননিরাপত্তাহীনতা, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি,কল্পনাতীত দুর্নীতি, ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক হানাহানিকে আড়াল করতেই কথিত সাম্প্রদায়িকতাকে মুখ্য করে তোলা হয়েছে। একই সাথে মানব ইতিহাসের নির্মম নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের ভেতরে কথিত সন্ত্রাসবাদকে আলোচ্য বিষয় বানিয়ে মিয়ানমারের মানবতাবিরোধী অপরাধের বৈধতা দেওয়ার একটি অশুভ প্রয়াস শ্বেতপত্রে লক্ষনীয়।
সামগ্রিক বিবেচনায় আমরা মনে করি যে,
১) কথিত শ্বেতপত্র বাংলাদেশের গণ-মানুষের হাজার বছরের চর্চিত ধর্ম-বিশ্বাস, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিরোধী একটি অপচেষ্টা।
২) শ্বেতপত্রটি বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক প্রস্তাবনার বিরোধিতা করেছে। মৌলিক প্রস্তাবনাকে সাম্প্রদায়িকতার সূত্র বলে অপব্যাখা করেছে। ফলে এই শ্বেতপত্র সংবিধান বিরোধী।
৩) কথিত শ্বেতপত্র মানব সভ্যতার প্রধান ভিত্তি নাগরিক স্বাধীনতা, অধিকার ও মর্যাদার নীতি লঙ্ঘন করে নাগরিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সার্বজনীন মানবাধিকার লংঘনের অপরাধ করেছে।
৪) এই শ্বেতপত্র স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত সাম্য,মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের চেতনাকে আঘাত করেছে।
৫) কথিত এই শ্বেতপত্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত অপরাধ এবং ভিনদেশী এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি অশুভ চেষ্টা।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
আপনাদের মাধ্যমে আমরা আবারো একটি কথা স্পষ্ট করতে চাই যে, এই শ্বেতপত্র কেবল ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে একটি চক্রান্ত তাই না বরং এই শ্বেতপত্রে যেভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িকতাকে চিত্রায়িত করা হয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের মাঝে যেভাবে কথিত সন্ত্রাসবাদকে ফোকাস করা হয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, এর সাথে ভূরাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় রাজনীতির কুটিল ও জটিল সম্পর্ক রয়েছে। এবং আশঙ্কাজনক কথা হল, এই শ্বেতপত্রে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী নানা বয়ান দৃশ্যমান। এমন একটা শ্বেতপত্রের বিরুদ্ধে ওলামায়ে কেরাম যখন বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে সরকারের মধ্যে ঘাপটি মারা একটি অংশ উলামাদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অপশক্তিই আমাদের আজকের ওলামা সম্মেলন বাঁধাগ্রস্ত করার পেছনে কলকাঠি নেড়েছে বলে আমাদের মনে হয়।
আমরা বিস্মিত হয়েছি, ঘাপটি মারা এই অংশটি আপাতত হলেও জয়ী হয়ে যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ চিন্তার বিষয়।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
আজ যে ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল তা ইসলামপন্থার অন্তর্নিহিত এক চিরন্তন চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ হতে যাচ্ছিল। ইসলামী জ্ঞানতত্ত্বের বিশালতা ও ইসলামী চিন্তার অন্তর্গত স্বাধীনতার কারণে বাহ্যত ইসলামপন্থায় নানা মাসলাক, মাযহাব দেখা যায়। বাহ্যত বিচ্ছিন্ন নানা মত, পথ ও কর্মপন্থা দেখা যায়। কিন্তু দেশ-জাতি-মানবতা ও ইসলামের প্রশ্নে ইসলামপন্থা সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশবিরোধী শক্তি ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে।
আজকের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইসলামপন্থার সেই চিরন্তন চরিত্র ও শক্তির একটি বুদ্ধিবৃত্তিক উপস্থাপন হতে যাচ্ছিল। কুচক্রীদের অপচেষ্টায় আপাতত তার দৃশ্যায়ন না হলেও আমরা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, ওলামারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আপনাদের স্বার্থ রক্ষায় সদা প্রস্তুত, ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
আজকের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দেশের সর্বধারার আলেমগণ যেভাবে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছেন, সেজন্য জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে।
মানুষের আগ্রহ-উদ্দীপনার প্রতি বিনীত সম্মান জানাচ্ছে এবং দেশের আলেম-ওলামা, মাদরাসা, ধর্মপ্রাণ মানুষ ও দেশ প্রেমিক সকলকে আশ্বস্ত করছে যে, আমরা হতোদ্যম হবো না, আমরা নিরব হব না, আমরা পিছিয়ে যাবো না, আমরা থেমেও যাবো না; ইনশাআল্লাহ।
বরং দেশপ্রেমিক ইসলামপন্থীদের সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
ঘাদানিক সহ দেশ, জাতি, ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ নিয়মতান্ত্রিক বহুমাত্রিক সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। আমরা সকল অপশক্তির মোকাবিলায় বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও আইনি লড়াই অব্যাহত রাখব, ইনশাআল্লাহ।
১) অবিলম্বে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিকে জনতার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে শ্বেতপত্র প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
২) এই শ্বেতপত্রের সাথে জড়িত সকলের রাজনৈতিক গোপন অভিলাষ প্রকাশ ও ব্যবস্থা নিতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৩) ঘাদানিকের অর্থের উৎস খুঁজে বের করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
৪) এই শ্বেতপত্র স্পষ্টভাবেই সংবিধানের মৌলিক নীতির বিরোধিতা করেছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
৫) এই শ্বেতপত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছে এবং মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফলে ঘাদানিকের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
৬) এই শ্বেতপত্রে মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের এই মিথ্যাচারের তদন্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৭) গণকমিশন নিজ থেকে ক্ষমা চেয়ে শ্বেতপত্র প্রত্যাহার না করলে এই শ্বেতপত্র রাষ্ট্রকে বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
৮) এই শ্বেতপত্রে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সবকিছুর পেছনে দেশের ইসলামী রাজনৈতিকে, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, মাদরাসা শিক্ষা এবং আলেম-ওলামাদেরকে একতরফাভাবে দায়ী করা হয়েছে। অতএব, স্বাধীনতা পরবর্তী দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। একটি শক্তিশালী বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সংখ্যালঘুদের সম্পদ অবৈধভাবে ভোগ-দখল এবং সংখ্যালঘু সংক্রান্ত সকল অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং তদন্ত রিপোর্ট জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে।
৯) যারা বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন করে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে চায়, তাদের কার্যক্রমকে তদন্তের আওতায় এনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
১০) দেশের সম্মানিত আলেমদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
১১) কারাবন্দী সকল মজলুম আলেমদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
১২) ওয়াজ মাহফিল নিছক একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। তাই সারা দেশে ওয়াজ মাহফিল সকল প্রশাসনিক বিধি নিষেধের আওতামুক্ত রাখতে হবে।
১৩) সারা দেশের আলেম ওলামা ও মাদরাসার বিরুদ্ধে সকল প্রকার হয়রানী বন্ধ করতে হবে।
১৪) আল্লাহ, রাসূল (স.), ধর্মীয়-রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজে সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে মানহানিকর শব্দের ব্যবহার নিষিদ্ধে আইন করতে হবে এবং তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
১৫) দুর্নীতিমুক্ত ও নৈতিকতা সমৃদ্ধ সুনাগরিক গড়ে তুলতে সারা দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুসলিম সন্তানদের জন্য নামাজ শিক্ষা, কুরআন শিক্ষা এবং রাসূল (স.)-এর জীবনী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১) গণবিরোধী ‘গণকমিশনের’ কথিত শ্বেতপত্রের মিথ্যাচার ও অসৎ উদ্দেশ্যের মুখোশ উম্মোচন করে বস্তুনিষ্ঠ শ্বেতপত্র প্রকাশ করা।
২) দেশের সকল মসজিদ ও জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানে কথিত গণকমিশনের মিথ্যাচার ও দেশবিরোধী কর্মকান্ডের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা।
৩) গণকমিশন ও ঘাদানিকের মিথ্যাচার ও দেশবিরোধী কার্যক্রম সম্পর্কে জন সচেতনতা তৈরির লক্ষে গণ-মতবিনিময় সভাসহ জন সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা।
৪) দেশের সকল জেলা/মহানগর, থানা/উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে তৃণমূল ওলামা সম্মেলনের আয়োজন করা।
৫) এরপরও কথিত শ্বেতপত্র ও গণকমিশনের বিষয়ে সরকার কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করলে রাজধানী ঢাকায় ওলামা-মাশায়েখ ও সূধী সমাবেশ করা হবে।সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি, আল্লাহ হাফেজ।