লক্ষ্মীপুরে সরকারি ভূমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ।
লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলার পৌরসভার মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন মেজু সরকারি জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌরসভার তহশিলদার ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে মেয়র মেজু দাবি করছেন, এটি তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি। রোববার (১ মে) বিকেলে রামগতি পৌর ভূমি কার্যালয়ের তহশিলদার মীর জিয়াউদ্দিন কাজ বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।মেয়র মেজু জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক।
ভূমি কার্যালয় সূত্র জানায়, রামগতি পৌরসভার আলেকজান্ডার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে সরকারি ৮ শতক জমি দখল করে মেয়র মেজবাহ উদ্দিন বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করছিলেন। ১৮ এপ্রিল স্থানীয় ৩ জন বাসিন্দা লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকসহ (ডিসি) সরকারি ৭টি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এনিয়ে জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দের নির্দেশে মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়র বিভিন্নভাবে ফের কাজ শুরুর পাঁয়তারা করছেন।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকা নির্মাণ কাজ শুরু করতে শনিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে মেয়র প্রয়োজনীয় ইট-বালুসহ সরঞ্জামাদি এনেছেন। প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে তিনি ভবন নির্মাণ করে দখল করতে পাঁয়তারা করছেন।
অভিযোগ সূত্র জানায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মেয়র মেজুর বাবা এম ওয়াজি উল্যা মিয়া সরকারি জমি দখল করে একটি টিনশেট ঘর নির্মাণ করেন। সম্প্রতি আগুনে পুড়ে ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে মেজু ওই জমিটি পুনরায় দখল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সাবেক উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুচিত্র রঞ্জন দাস ও উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বাঁধায় তিনি জমিটি দখল করতে পারেননি। কিন্তু বর্তমান সহকারী কমিশনার ও পৌর তহশিলদারের তদারকির অভাবে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে মেয়র সেখানে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
তহশিলদার মীর জিয়াউদ্দিন বলেন, জমিটি সরকারের। মেয়র নিজের জমি দাবি করলেও কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। আমরা কাজ বন্ধ রাখার জন্য বারবার তাকে বলছি। কাজ চলাকালীন বাঁধাও দিয়েছি। এখন আবার কাজ শুরু করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে শুনেছি।
রামগতি পৌরসভার মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন মেজু বলেন, সরকারি নয়, পৈত্রিক সম্পত্তিতে আমি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করছি। ৫০ বছর ধরে জমিটি আমাদের দখলে রয়েছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এটি মিথ্যা।
এই ব্যাপারে রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, ঈদের ছুটিকে পুঁজি করে মেয়র ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করার পাঁয়তারা করছেন, বিষয়টি জেনেছি। ঘটনাস্থল লোক পাঠানো হচ্ছে। কাজ যেন না করতে পারে- এজন্য আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।