ওসমানীনগরে ৭ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা ৫ জনকেই চেনে না বাদি
সিলেটের ওসমানীনগরর থানায় দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত ৭ জনের মধ্যে ৫ জনকেই চেনে না মামলার বাদি নির্যাতিতা গৃহবুধু। ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যে ওই গৃহবধূ আদালতে এফিডেভিট প্রদান পূর্বক এজহারভুক্ত ৫ জনকে চেনে না এবং তাদেরকে তিনি মামলায় অভিযুক্ত করেন নাই বলে দাবি করেছেন মামলার বাদি ও ভুক্তভোগী ওই গৃহবধু।
অভিযোগ উঠেছে, স্বামীর নির্যাতনের স্বীকার হয়ে কতিপয় প্রভাশালীদের কাছে বিচার চাইতে গিয়ে তাদের খপ্পরে পড়ে স্বামীসহ সাতজনের নামে দায়েরকৃত ধর্ষন মামলার অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর নেয় ওই প্রভাবশালীরা। মামলা থানায় নথিভুক্ত হওয়ার পর বাদি জানতে পারেন সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালীরা নিজ স্বার্থ হাছিলের জন্য ৭ জনের মধ্যে ৫ জনকেই হয়রানীর উদ্দেশ্যে মামলায় আসামী করা হয়েছে। যা তিনি পুলিশসহ আদালতে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। চাঞ্চলক্যর ঘটনাটি নিয়ে গোটা এলাকায় এখন তুলপার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ন্যাক্কারজনক ভাবে ধর্ষণ মামলায় পাঁচ জনকে আসামী করে হয়রানী করায় ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ফুঁেস উঠেছে এলাকাবাসীসহ স্থানীয়রা। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে উপজেলার তাজপুর ইউপির কাদিপুর গ্রামের ধন মিয়ার বাড়িতে কয়েক শতাধিক লোকজনের উপস্থিতিতে প্রতিবাদ সভা করে এলাকাবাসী। ওই সভায় ভোক্তভোগী লোকজন ও নির্যাতিতা উপস্থিত হয়ে এলাকার চিহ্নিত ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
মামলার বাদি নির্যাতিতা গৃহবধু বলেন, প্রায় ৯ মাস পূর্বে উপজেলার কাদিপুর গ্রামের চুনু মিয়ার ওকালতিতে বালাগঞ্জ উপজেলার বাবরকপুর গ্রামের নজির মিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ের পর স্বামী নজির আমাকে নিয়ে উপজেলার গোয়ালাবাজার এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় উঠেন। এরপর থেকে স্বামীসহ চুনু মিয়া জোরপূর্বক আটকে রেখে ধর্ষনসহ নানা ভাবে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে আমি ৬ মাসের অন্তসত্তা হয়ে পড়লে তাদের কবল থেকে পালিয়ে গিয়ে আমার হতদ্ররিদ্র মাসহ পরিবারের সবাইকে বিষয়টি অবগত করি। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে বিচারের আশায় উপজেলার তাজপুর ইউপির ৯ নং ওর্য়াডের সাবেক সদস্য কাদিপুর গ্রামের নেপুর আলী ও সজ্জাদ মিয়ার দ্বারস্থ হই। তাদের মাধ্যমে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) তে ভর্তি হই। সেখান থেকে বের হওয়ার পর আমি অনেকটা মানুষিক ভারষাম্যহীন থাকা অবস্থায় মামলার লিখিত অভিযোগ পত্রে কৌশলে আমার স্বাক্ষর নিয়ে ওই অভিযোগ দিয়ে নেপুর আলী ও সজ্জাদ আলী আমাকে মামলা করার জন্য থানায় পাঠায়।
আমি লেখাপড়া না জানায় ওই কাগজে কাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে সে বিষয়েও আমি কিছুই জানিন না। মামলা দায়েরর পর জানতে পারি উপজেলার তাজপুর ইউপির কাদিপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, দুধাই মিয়া, কবির মিয়া, দেলোয়ার হোসেন ও রিপন মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। যা আদৌও তারা আমার ঘটনায় জড়িত নয় এবং আমি তাদেরকে চিনিও না তাদের সাথে আমার কোনো ধরণের সম্পর্কও নেই।
কাদিপুর গ্রামের বাদিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য দরছ আলী বলেন, প্রতিহিংসাবসত হয়ে একজন নির্যাতিতা নারীকে ব্যবহার করে বিচারের নামে গ্রামের নির্দোষ ৫জন ব্যাক্তিকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসিয়ে তাদের মান সম্মানহানী করেছেন নেপুর আলী ও সজ্জাদ মিয়া গংরা।
মামলায় আসামি হয়ে হয়রানির শিকার মিজানুর রহমানের বড় ভাই লুৎফুর রহমান বলেন, প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে নেপুর আলী ও সজ্জাদ মিয়া আমার ভাই সহ গ্রামের অন্য আরো চার সম্মানী ব্যক্তিকে ধর্ষণ মামলায় আসামি করে আমাদের মান-সম্মান বিনষ্ট করেছে। আমরা প্রশাসনের নিকট বিচার দাবী করছি।
সাবেক ইউপি সদস্য নেপুর আলী বলেন,আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার রটানোসহ বিভিন্ন ভাবে আমার ক্ষতি করার চেষ্ঠা করা হচ্ছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাইন উদ্দিন বলেন,মামলাটি এখনও তদন্তাধীন আছে। তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে কে জড়িত আছে,কে জড়িত নেই বের হয়ে আসবে।