নীলফামারীর ডিমলায় বোরো ধানে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (BLB) রোগের লক্ষন দেখা দিয়েছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছে স্থানীয় কৃষকেরা।
চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকেরা একমুঠো ভাতের আশায় ও জীবনের সুখ সাচ্ছন্দ উপভোগ করার জন্য ধার-দেনা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষি জমিতে মনের আনন্দে বোরো ধান রোপন করে। জমিতে বোরো ধানের চারা রোপনের পর কৃষকের রোপনকৃত ধান গাছ গুলো মাঠের পর মাঠ যখন সবুজ তখন স্বপ্ন ও আশার বুক বাঁধেন স্থানীয় কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস হতে স্থানীয় কৃষকদের বোরো ধান চাষে প্রশিক্ষন ও উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগন নিজ নিজ ব্লকে মাঠ পর্যায়ে বোরো ধান চাষে কিভাবে ভাল ফলন পাওয়া যায় সে বিষয়ে পরিচর্যা, রোগ প্রতিকার সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ লিফলেট বিতরন করে আসছে।
বোরো ধানগাছ গুলো যখন প্রাকৃতিক রুপে যৌবনে ভরপুর। ধান গাছের ডগার বুক চিরে বের হবে সবুজ কচি ধানের শীষ। সেই সময় ধান ক্ষেতে দেখা দিয়েছে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (BLB) রোগের লক্ষন। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকেরা বালাইনাশক ঔষুধ ব্যবহার করলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না রোগটি সম্পর্কে কৃষকেদের ধারনা নতুন তাই তাদের কাছেও অজানা। এতে বোরো ধান চাষে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিন তিতপাড়া সহ অন্যান্য ইউনিয়নের প্রায় সর্বত্র বোরো ধান ক্ষেতে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (BLB) রোগটি লক্ষনীয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সরে জমিনে দক্ষিন তিতপাড়া গ্রামের কৃষক আইনুল হক সংবাদকর্মীকে জানান, আমি ২২ বিঘা জমিতে সিনজেনটা কোম্পানীর ১২০৫ জাতের হাইব্রীড ধান রোপন করেছি তার মধ্যে ১৪ বিঘা জমির ধান গাছের সবুজ পাতাগুলো খড়ে পরিনত হচ্ছে শীষ গুলো আস্তে আস্তে সাদা হচ্ছে বালাইনাশক ঔষুধ স্প্রে করেও কোন লাভ হচ্ছে না তবে কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার মুহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, এটা ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (BLB) রোগ ধানের তেমন ক্ষতি হবে না ।
স্থানীয় কৃষক আমির হোসেন.সাথে কথা বলে জানা যায় ব্লক পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি অফিসারদের পরামর্শ নিয়ে আমরা চারা রোপনের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ৩-৪ বার স্থানীয় বাজার থেকে বালাইনাশক ঔষুধ ক্রয় করে ধান ক্ষেতে স্প্রে করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না বিভিন্ন ধরনের রোগের আক্রমনে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে ধান ক্ষেত। আমাদের যে স্বপ্ন তা পুরন হবার না যে টুকু জমিতে ধানের শীষ বের হয়েছে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও শিলাবৃষ্টির ফলে আমরা অনেক ভয়ে ভয়ে আছি ।
মধ্যম সুন্দর খাতা গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ জানান বালাপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি অফিসার শাহিনুর রহমান আমাদের এলাকার কৃষকদের সবসময় পরামর্শ দিয়ে আসছে কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্য্যোগ হলে করার কিছুই নাই।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সেকেন্দার আলী জানান, ধানের শীষ বের হওয়ার সময় বৈরী আবহাওয়া প্রাকৃতিক দূর্যোগের ফলে দিনের বেলায় রোদের তাপ, রাতে ঠান্ডা আর সকালে শীত পড়ায় ধান ক্ষেতে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (BLB) রোগের লক্ষন দেখা দিয়েছে। এ রোগ নির্মুলে তেমন কোন কার্যকরী বালাইনাশক ঔষুধ নেই তবে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। কৃষকদের রোগ বালাই এর প্রতিকার সম্পর্কে উপসহকারী কৃষি অফিসাররা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছে।