নলডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে ক্ষতিগস্ত পরিবারের বাঁচার আকুতি।
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মকবুল হোসেন। এক সময় পরিবারটির সব ছিল।অসহায় মানুষরা সাহায্য চাইলে সাহায্য দিতেন।কিন্তু,পরিবারটি এখন নিজেই নিঃস্ব। পরনে কাপড় ছাড়া গভীর রাতে আগুনে বসতবাড়ির ৪টি ঘরের সবকিছু পুড়ে যায় সর্বনাশা আগুনে।
অন্যকে সাহায্য করা পরিবারটি এখন বাঁচার জন্য অন্যের কাছে হাত পাততে হচ্ছে।প্রতিবেশির দেওয়া খাবার খেয়ে রাতে পরিবারটির সদস্যরা খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করেছেন।
গতকাল বুধবার উপজেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সামগ্রী ও নলডাঙ্গা পৌরসভার পক্ষ থেকে নগদ কিছু অর্থ দিয়ে সহয়তা করা হয়।এ সহয়তা পরিবারটির জন্য এ মহুর্তে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।কিন্ত গভীর রাতের আগুনে পুড়ে গেছে বসতবাড়ির ৪টি ঘরের ২০ বান্ডিল টিন,গচ্ছিত নগদ অর্থ, গবাদী পশু সহ ঘরের যাবতীয় আসবারপত্র পুড়ে ছাই হয়ে ৭-৮ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।পুড়ে যায় চতুর্থ শ্রেণিতে পুড়–য়া মকবুল হোসেনের নাতনি মেঘার স্কুল ড্রেস, সব বই, খাতা ও কলম।এখন সেই মেঘার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।এ পরিস্থিতিতে দরিদ্র কৃষক পরিবারের ঘুরে দাড়াতে নতুন করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা প্রয়োজন।
কিন্ত এত টাকা এই মহুর্তে জোগার করা সেই পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।কারন তাদের মাঠে কোন জমি নাই এমনকি যে যায়গায় বাড়ি করে আছে সেই আড়াই শতক জমি অন্যের দান করা। আগুনে নিঃস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্র মকবুল হোসেন পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন।
দরিদ্র কৃষক মকবুল হোসেন বলেন,গভীর রাতে আগুনে পুড়ে আমার সবকিছু হারিয়ে আমি দিশেহারা।এখন আমি পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।প্রশাসন থেকে সামন্য খাদ্য সামগ্রী ও পৌরসভার পক্ষ থেকে নগদ কিছু অর্থ দিয়েছে।তাই দিয়ে পরিবার নিয়ে কোন মতে খেয়ে বেঁচে আছি।এখন নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে প্রয়োজন দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা,যা আমার পক্ষে অসম্ভব।আমি সরকারের কাছে দাবী করছি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি বাড়ি দিলে আমি নতুন করে বেঁচে থাকার অবলম্বন হবে।
নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির বলেন,আগুনে পুড়ে ক্ষতিগস্ত পরিবার কে নগদ কিছু অর্থ সহয়তা দিয়েছি।পরবর্তীতে আরো কোন সুযোগ সুবিধা আসলে সেগুলো পরিবারটিকে দেওয়া হবে।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন,আগুনে ক্ষতিগস্ত পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছি।এই মহুর্তে টিন বরাদ্দ নাই টিন বরাদ্দ আসলে কয়েক বান্ডিল টিন দেওয়া হবে।আর আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি বাড়ি দেওয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে আরো খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য,গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে উপজেলার মাধবপুর নওদাপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক মকবুল হোসেনের ৪টি বসতঘর ও আলমগীরের ২টি ঘর বৈদ্যতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে ৭-৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।