বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ের ঠিক আগের পর্যায়ে এসেছে। এটি এখনো বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থান করছে। গভীর নিম্নচাপটি সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় অশনিতে পরিণত হতে পারে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছেন।
এ জন্য চট্টগ্রাম,কক্সবাজার,মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে অশনির প্রভাব বাংলাদেশে তেমন পড়ার শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এটি সমুদ্রে থাকতেই অনেকটা দুর্বল হয়ে যাবে, এরপর মিয়ানমারের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
সোমবার (২১ মার্চ) সকালে আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে বিকেল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে সোমবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সঙ্গে বইছে ঝড়োহাওয়াও। ঘূর্ণিঝড় ‘অশনিথ মঙ্গলবার উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর মিয়ানমার ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ উপকূলে পৌঁছাবে।
এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞানী আর কে জানামনি জানান, বঙ্গোপসাগরের ওপরে তৈরি নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর দিকে এগোচ্ছে। যাত্রাপথেই আরও শক্তি বাড়াবে নিম্নচাপটি। এর জেরে সকাল থেকেই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার সকালের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের ওপরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর শক্তিও বাড়তে থাকবে, বিকালের মধ্যেই তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। যদি আবহাওয়ার হঠাৎ কোনো বড় পরিবর্তন না হয়, তবে সন্ধ্যার মধ্যে তা ঘূর্ণিঝড়ের আকার
ধারণ করবে।
এদিকে শনিবার থেকেই ভারতের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলোর তৎপরতাও আপাতত বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।