সিলেট পৃথক স্থানে ২ ব্যক্তি লাশ উদ্ধার ; আটক-৩।
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ঘাঠেরচটি ও নয়াটিলা নামক পৃথকস্থান থেকে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশের সদস্যরা। উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের ঘাঠেরচটি এলাকার মৎস্য খামার ও নয়াটিলা জামে মসজিদ সংলগ্ন কৃষি জমি থেকে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে উপজেলার ঘাঠেরচটি এলাকার নায়াটিলা জামে মসজিদ সংলগ্ন কৃষি জমিতে মাটি চাপা অবস্থায় নিখোঁজ হওয়া ডালিম আহমদ (২২) নামের যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ডালিম আহমদ উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের ঘাঠেরচটি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে । তবে পূর্বের উদ্বার হওয়া লাশটি বটেশ্বর এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া ব্যাক্তি হতে পারে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন।
গত সোমবার বিকেল ৩ টার দিকে একই এলাকার তারেক হাজীর মৎস্য খামারের পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত এক জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গলায় দড়ি পা বাঁধা ও মাথার পিছনে আঘতের চিহ্ন ছিল। নিহত ব্যাক্তির পরিচয় এখনো সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে ঐদিন লাশ টি ডালিমের লাশ বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা ধারনা করছিল, ময়না তদন্ত শেষে লাশটি দাফন করে ডালিমের পরিবার। দাফন করার কিছুক্ষন পর পুলিশ নিশ্চিৎ হয় লাশটি ডালিমের নয়। নড়ে-চড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন, সাধারণ ডায়রি নিয়ে আবাও মাঠে নেমে পড়ে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়ান্দা সংস্থার প্রতিনিধি।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়, উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের কামরান(২৫), মানিক(৩৮) ও নাম নাজান আরেক ব্যাক্তিকে।
তাদের দেওয়া তথ্যের বৃত্তিত্বে মঙ্গলবার ৮ মার্চ রাত ১০টার দিকে ডালিমের সন্ধানে বের হয় পুলিশের একটি ইউনিট। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে পুলিশ বিদ্যুতিক খুটির মধ্যে রক্তের দাগ দেখতে পায়, আরেকটি সামনে অগ্রসর হয়ে রক্ত মাখা ছুরা উদ্বার করে রাত ১টার দিকে ঘাঠেরচটি এলাকার নায়াটিলা জামে মসজিদ সংলগ্ন কৃষি জমিতে মাটি চাপা অবস্থায় ডালিমের লাশ খুঁজে পায় পুলিশ। ৭ মার্চ জৈন্তাপুর থানা পুলিশ অঞ্জাত আরেকটি লাশ উদ্বার করলে তার পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ৫ মার্চ ডালিম তার স্ত্রীকে নিয়ে শশুর বাড়ী ঠাকুরের মাটি এলাকায় বেড়াতে যায়। সেখান থেকে রাতে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলে ও সে আর বাড়ি ফিরে যায়নি। বাড়ীতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি শুরু করে। নিকট আত্মীয় সহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নিয়ে কোন রকম সন্ধান না পেয়ে তার বাবা বাচ্চু মিয়া রবিবার ৬ মার্চ জৈন্তাপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন।
মঙ্গলবার ৮ মার্চ রাত ১০টার দিকে ডালিমের সন্ধানে বের হয় পুলিশের একটি ইউনিট। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে রাত ১ টার দিকে ঘাঠেরচটি এলাকার নায়াটিলা জামে মসজিদ সংলগ্ন কৃষি জমিতে মাটি চাপা অবস্থায় ডালিমের লাশ খুঁজে পায় পুলিশ। রাত ২টায় পুলিশ ডালিমের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমদ সাংবাদিকদের জানান, ধারনা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা ডালিমকে গলা কাটে, হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যার পর মাটি চাপা দিয়ে ফেলে যায়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সন্দেহ জনক হওয়াতে ডালিমের সাথে চলাফেরা করে এমন তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা পুলিশের হেফাজতে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যার রহস্য জানা যাবে।