বিএনপি নির্বাচন অংশগ্রহণে ভয় পায়-ঠাকুরগাঁওয়ে ড.হাছান মাহমুদ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ, এমপি বলেছেন, গত ১৩ বছরের সরকারের উন্নয়নের কারণে রাজনৈতিক পরাজয়ের শঙ্কায় বিএনপি ও তারা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
আজ দেশের সব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। গত ১৩ বছরের বাংলাদেশ আজ বদলে গেছে। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। আগের তুলনায় দেশর মানুষ অনেক ভাল আছে। আর এ জাতীয় উন্নয়ন যাদের পছন্দ হয়না বিএনপি ও তাদের দোসররা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে এবং দেশের মানুষের মধ্যে তারা নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বুধবার দুপুরে (০৯ মার্চ) জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম বিডি হলে জেলা আ.লীগের বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আ’লীগ গণমানুষের সংগঠন এবং বাঙালির সমস্ত অর্জন এসেছে আ’লীগের মাধ্যমে। বাঙ্গালীর স্বাধীনতার সংগ্রামের নেতৃত্বে দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গন্ধুর স্বপ্ন পুরনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর ৯৯তম। শস্য উৎপাদনের দিক দিয়ে ২য়, আলু উৎপাদনে সপ্তম, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে সেরা। আজ আমি ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছি তৃনমূলের নেতাদের সাথে কথা বলার জন্য, সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য।যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা প্রদান করার জন্য।
প্রথমত বিএনপি নির্বাচন অংশগ্রহণে ভয় পায়। তাদের জ্বালাও পোড়াও রাজনীতির জন্য তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান শাস্তিপ্রাপ্ত ও দন্ডপ্রাপ্ত আসামী। সে কারনে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবে না। তাদের নির্বাচনে কোন আগ্রহ নাই। এজন্য তারা তাদের দলকেও নির্বাচনমুখী করতে চায় না। আগামী নির্বাচনে তাদের যে পরাজয় হবে এটি মোটামুটিভাবে তারা নিশ্চিত হয়েছে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ও বিএনপির নেতারা আমাকে উদ্দেশ্যে করে বিভিন্ন কথা বলছেন। আমি গ্রামের এমপি। গত ২০ বছরে আমি সব সময় আমার নির্বাচনী এলাকায় মাঝে মধ্যেই যাই। কিন্তু মির্জা ফখরুলেরা সব সময় নয়াপল্টনে বসে থাকেন। সেখানেই খান,সেখানেই ঘুমান। সে কারনে তারা দেশের অবস্থা জানেন না। আমরা যে সারাদেশ বিচরন করি। সারাদেশ আমরা ঘুরে বেড়াই। মির্জা ফখরুল ও রিজভী সাহেবরা কার্যালয়ে বসে থাকতে থাকতে তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। আর তারা যে তথ্যগুলো উপস্থাপন করছেন সেগুলো জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য।
করোনা ও ইউক্রেন রুশ যুদ্ধের জন্য ২/১ টি পন্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। এছাড়াও বিএনপি পন্থী ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট তো রয়েছে এতে। এটা শুধু আমাদের দেশে না সারা বিশ্বে পন্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবিষয়ে ইতিমধ্যে নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।
সাধারণ মানুষ যাতে ক্রয়সীমার মধ্যেই যেকোন পণ্য সামগ্রী পেতে পারে এজন্য টিসিবির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রত্যেকটি স্বল্প আয়ের মানুষকে এ টিসিবির পন্য দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করে। সে সকল ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
পরে প্রধান অতিথি আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, আমরা আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বর্ধিত সভা করছি। সভার অর্থ হলো আবার সংগঠনকে গতিশীল করা। দীর্ঘদিন পরে হলেও আমরা একত্রে মিলিত হয়েছি।
যারা এবারের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হয়েছেন আপনাদের জানা উচিত কিভাবে চেয়ারম্যান হয়েছেন। যারা হতে পারেননি বিভিন্ন কারনে বা দলীয় কোন্দলের কারনেহেরেছেন। আমরা একমাত্র হরিপুর ছাড়া জেলার প্রত্যেকটা উপজেলা,থানায় ভাল ফলাফল করেছি। এজন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নিজেদের কোন্দলের কারনে কিছু হেরে গেছেন।সদর উপজেলার হারার কথা না। ২২টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা।
আমরা প্রত্যেকটা জিততে পারতাম। কিন্তু ৫/৬ টা হেরেছি নিজেদের কোন্দলের কারনে। এ কারনে অনেক নেতা কর্মী বহিস্কার হয়েছেন। এটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করা হয়েছে। এখন থেকে আপনাদের বিভিন্ন চিন্তা ভাবনা গুলি চিহ্নিত করতে পারলে সেগুলো সমাধান করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আমরা আবার নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসবো। আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমেই তারা আসুক।
অনুষ্ঠানে জেলা আ.লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহ: সাদেক কুরাইশীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, প্রধান অতিথি আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, বিশেষ অতিথি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, সদস্য ও সাবেক এমপি এ্যাড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সদস্য ও সাবেক এমপি এ্যাড. সফুরা বেগম রুমি প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়।
অনুষ্ঠানে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দবিরুল ইসলাম, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসম গোলাম ফারুক রুবেল, এ্যাড. মোস্তাক আলু টুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ জুলফিকার আলী ভুট্টো, ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন, প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, প্রত্যেক উপজেলার আ’লীগের সভাপতি, সম্পাদক,সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আ’লীগের বিভিন্ন সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।