ত্যাগীদের বঞ্চিত করে অনিয়মতান্ত্রিক বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্নর অভিযোগ।
দলের ত্যাগী নেতাদের কৌশলে বঞ্চিত করে অনিয়তান্ত্রিক ভাবে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন করে উপজেলা বিএনপির কমিটির নামে প্রহসন কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগ রয়েছে,ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে দলের নীতি আদর্শ ভুলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কমিটি ঘোষনা দিয়ে উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনকে ধ্ধংস করার হীন উদ্দেশ্যে মেতে উঠেছেন ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রশিদির লুনার অনুসারী উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নূল হক চৌধুরী। এনিয়ে উপজেলা বিএনপি ও অংঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ করছে।
একাধিক ত্যাগী নেতারা বিষয়টি নিয়ে দলের মহাসচিব বরাবর লিখিত অভিযোগসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিতে শুনা গেলেও অনেকে আবারও মূয়নূল হক চৌধুরী সিন্ডিকেটের ভয়ে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছেন। উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের একাধিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত উপজেলা নির্বাচনে দলের মনোনিত হয়ে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অক্লান্ত প্ররিশ্রমে ময়নূলহক চৌধুরী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দলীয় কর্মকান্ড থেকে নিজেকে আড়াল রাখার পাশাপাশি বিএনপির তথা জিয়াউর রহমানের নীতি আদর্শ ভুলে তিনি হয়ে উঠেন দিনের আওয়ামীলীগ ও রাতের বিএনপি।
এ ক্ষেত্রে দিনের বেলা সরকারী বা সামাজিক অনুষ্টনের দোয়াই দিয়ে আওয়ামীলীগের সাথে আতাতের রাজনীতি চালিয়ে গেলেও রাতে ইলিয়াস পত্নী লুনার সাথে যোগাযোগ করে বিএনপি বনে বিগত পঁাচ বছর কাঠিয়ে দিলেও আগামী উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ ক্ষেত্রে তঁার নিজস্ব সিন্ডিকেট দিয়ে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কমর্ীদের হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখছেন। নিজ বলয়কে শক্তিশালী করতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পকেট কমিটি গঠনে কলকাটি নাড়েন।
এমতাবস্থায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা এই কমিটি বাতিল করে গোপন ভোটের মাধ্যমে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। অভিযোগ রয়েছে, গোপন ব্যালটে নির্বাচন হবার বিধান থাকলেও মৌখিকভাবে ভোট গ্রহণ করে ইচ্ছে মতো ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। যা বিএনপি‘র দলীয় আদর্শ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি।স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের নিয়ম থাকলেও নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্যে ৪০ জন কাউন্সিলরের মৌখিক ভোট গ্রহণ করেন।
এতে ভোটাররা সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দ্বারা প্রভাবিত হন বলে অভিযোগ করেছেন পরাজিত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।জানা গেছে,দীর্ঘ ৬ বছর পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলার দয়ামীর বাজারে উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপিথর চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপিথর আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী। কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশনের অলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপিথর আহবায়ক জরিদ আহমদ। ২য় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন, জেলা বিএনপিথর আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার।দ্বিতীয় অধিবেশনে দয়ামীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসটিএম ফখর উদ্দিনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা বিএনপিথর সভাপতি ঘোষণা করা হয়।সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় মৌখিক ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়।
পদ পদবী বঞ্চিত বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান,পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাউন্সিলারদের প্রকাশ্যে প্রভাবিত করে এস টি এম ফখর উদ্দিনকে সভাপতি,মুজাহিদুল ইসলামকে সহ সভাপতি, আব্দুল্লাহ মিছবাহকে সাধারণ সম্পাদক, কয়েছ আহমদ চৌধুরীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,রায়হান আহমদকে সাংগঠনিক সম্পাদক ঘোষনা দিয়ে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির আশিংক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও কাউন্সিলের পূর্বে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রাথর্ীতা প্রত্যাহারকারী এক বিএনপি নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এসব অনিয়মতান্ত্রিক বিষয়গুলো পূর্ব থেকে আচঁ করতে পেরে মান-সম্মানের ভয়ে নিজের প্রাথর্ীতা প্রত্যাহার করেছি।সদ্য ঘোষনাকৃত মনগড়া কমিটির মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেটের মিশন বাস্থাবায়নর হলেও বিএনপি ও ইলিয়াস আলীর নীতি আদর্শকে ধংস্স করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী গয়াছ মিয়া বলেন, বিএনপি‘র আদর্শ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কার্যক্রমের মাধ্যমে উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।গোপন ব্যালটে নির্বাচন হবার বিধান থাকলেও মৌখিকভাবে ভোট গ্রহণ করে ইচ্ছে মতো ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কোনভাবেই এই ভোটকে স্বচ্ছ বলা যায় না। এটা দলের কাউন্সিলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অবৈধ।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ এনামুল হক পীর এনাম বলেন বিএনপিথর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে,ভোটার তালিকা প্রণয়ণ করে কাউন্সিলের ভোট গ্রহণের বিধান রয়েছে। কিন্তু উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে নেতৃবৃন্দ সারি বেধে প্রকাশ্য টেবিলে বসে ভোটারদের ভোট নেন। এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নূল হক চৌধুরী ভোটারদের প্রভাবিত করে নিজ স্বাথ হাছিলে পকেট কমিটি ঘোষনা দিয়ে বিএনপির ঘাটি খ্যাত ওসমানীনগরে বিএনপিকে ধংস্স করার পায়তারায় মেতে উঠেছেন।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী সৈয়দ এনায়েত হোসেন বলেন, কাউন্সিলের অন্তত ৭ দিন পূর্বে প্রার্থী ও ভোটারদের ভোট গ্রহণের দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। কাউন্সিলের মাত্র ২ দিন আগে (২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী) তাজপুর, গোয়ালাবাজার ও উসমানপুর ইউপিতে মনগড়া কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটিতে যোগ্যতার বিচার না করে ময়নূল হক চৌধুরী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তঁার পছন্দের লোকদের অন্র্Íভূক্ত করিয়েছেন। রাতারাতি (২৮ ফেব্রুয়ারী) উপজেলা বিএনপি সম্মেলনের আয়োজন করে ইউনিয়ন বিএনপির ভোটারদের একটি নির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রভাবিত করে ভোটের নামে প্রহসন করে মনগড়া কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে।এখানে ভোটাধিকার হচ্ছে জাস্ট আইওয়াশ। বিএনপি নেতা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক চৌধুরী আড়ালে থেকে এসব নীল নকশার বাস্তবায়ন করে বিএনপিকে ধংস্স করে দিচ্ছেন।
এ ব্যপারে জানতে ওসমানীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপি নেতা ময়নূল হক চৌধুরীর মুঠো ফোনে শনিবার একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভি করেননি।
সিলেট জেলা বিএনপিথর আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন,কমিটি গঠন এটা আমাদের দলীয় অভ্যান্তরীণ বিষয়।এটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করাই ভালো। ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনের ব্যাপারে দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ও অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন,এটা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করে লাভ নেই এ বিষয়ে কেন্দ্রে লিখিত ভাবে অভিযোগ করতে পারেন।