অব:শেষে কলাপাড়া চিংঙ্গরিয়া জ্বিন খালে ভরাট কাজ বন্ধ।
কলাপাড়া পৌরসভার চিংঙ্গরিয়া প্রবাহমান জ্বিন খালে অবৈধভাবে বালু দিয়ে ভরাটের কাজ উপজেলা ভূমি প্রশাসন আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। শহরের পানি নিষ্কাশনের এই খালটি ভূমি অফিসের লোকজন চাষযোগ্য কৃষি জমি দেখিয়ে আশির দশকের মাঝামাঝি সময় ব্যবসায়ী রবীন্দ্র নাথ দাস এবং রবীন্দ্র নাথ হাওলাদারকে বন্দোবস্ত দেয়। সোমবার ওই রবীন্দ্র নাথ দাস পাইপ দিয়ে খালটি ভরাটের কাজ শুরু করলে কলাপাড়া সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো: আল কাইয়ুম ঘটনাস্থলে গিয়ে ভরাট কাজ বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে খালটিতে বুক সমান পানি রয়েছে। ৮৪২ নম্বর দাগে খালটির অবস্থান। খেপুপাড়া মৌজার এক নম্বর খাস খতিয়ানে অবস্থিত এ খালটি। খালটির দুই পাড়ে চার শতাধিক পরিবার রয়েছে, যাদের পয় নিষ্কাশনের পথ এই খালটি।
স্থানীয় বাসিন্দা খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: আমান উল্লাহ প্রধান আবেদনকারী হয়ে শতাধিক মানুষের স্বাক্ষর সংবলিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা খাস ভূমি ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশে জেলা ভূমি প্রশাসন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে দেয়া এই বন্দোবস্ত কেসটি বাতিল করে দেয়।
কিন্তু রবীন্দ্র নাথ এ নিয়ে আদালতে মামলা করেন। এরপরে বন্দোবস্ত গ্রহিতাদ্বয় খালে একাধিক বাঁধ দেয়ার কারণে খালের দুই পারের বাসীন্দারা বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে পড়েন। কিছু এলাকা আবার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করেছেন। এক্ষত্রেও সাব রেজিস্টার খালকে নাল দেখিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন বলে স্থানীয় মানুষ জানান। বর্তমানে খালের বাঁধের কারণে বর্ষা মৌসুমে বসতবাড়ি পর্যন্ত বৃষ্টির পানি আটকে প্লাবিত হয়ে থাকে। সবশেষ বিএস জরিপকারীরা বাস্তবে জীবন্ত খালকে নাল জমি দেখিয়ে আরেক দফা চরম দুর্নীতি করে। বর্তমানে এ খালটি জনস্বার্থে রক্ষা করা প্রয়োজন।
খালের পাড়ের নজরুল ইসলাম সড়কের বাসীন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো: আমান উল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, যে খালে এখনও ৫-৭ ফুট পানি রয়েছে। খাল দখলরোধে এখনই পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। খালটি রক্ষায় দ্রুত বন্দোবস্ত কেসটি স্থায়ীভাবে বাতিল করা হোক।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরিশালের সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন এ প্রতিনিধিকে বলেন, খালকে চাষযোগ্য নাল জমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত দেয়া এবং বর্তমানে পানির প্রবাহমান খালে বালু ফেলে ভরাট সম্পুর্ণ আইন পরিপন্থী। বর্তমানে বালু ভরাটের কাজ বন্ধ থাকলেও স্থানীয় মানুষের মূল দাবি বন্দোবস্ত কেসটি বাতিল করে দ্রুত খালের বাঁধ অপসারন করে জীবন্ত খালকে মুক্ত করা হোক।
কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল গনমাধ্যমকে জানায়, খবর পেয়ে খালে বালু ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বালু ফেলার পাইপ সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।