বালিয়াডাঙ্গীতে ১৮ মাসে ২০টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ১৮ মাসের মধ্য ২০টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি ট্রান্সফরমার চুরির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এতে চোরাকারবারী জড়িতদের ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গীতে কৃষি কাজে ব্যবহৃত ৫৩৬টি সেচ রয়েছে। এর মধ্যে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় ১৮৯ টি। বাকি ৩৪৭টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ব্যক্তি মালিকানাধীন।
সেচের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ফলে বোরো চাষে সেচ প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে চুরি বন্ধ না হলে বোরো চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।
বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম কামরুল হাসান জানান, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে উপজেলার ১৩টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে আর ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৪টি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখের পর টানা তিন দিন ৩ টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এই চুরি অব্যাহত থাকলে বোরো চাষি, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও সরকারকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
কামরুল আরও বলেন, ‘চুরি হওয়া ৫ কেভি ট্রান্সফরমার প্রতিটির মূল্য প্রায় ৪৩ হাজার টাকা। সমিতির নিয়ম অনুযায়ী ট্রান্সফরমার চুরি হলে সেচের মালিককে পুরো টাকা পরিশোধ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছ থেকে পুনরায় ট্রান্সফরমার সংগ্রহ করতে হবে। এদিকে ট্রান্সফরমার পুনরায় স্থাপন কাজে সময় ব্যয় হওয়ার কারণে বোরো খেত শুকিয়ে নষ্ট হতেও পারে।
এদিকে চুরির ঘটনা নিয়ে বিব্রত বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, এক বছরে ৫টি ও চলতি মাসের ফেব্রুয়ারিতে ২টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। তবে এসব ট্রান্সফরমার স্থাপনে অর্ধেক খরচ ব্যয় করেছে সরকার। কৃষকেরা চাইলে অর্ধেক খরচ ব্যয় বহনে কিস্তির সুবিধাও নিতে পারবেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, ‘সেচকাজে ব্যবহৃত ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধ করা না গেলে বোরো চাষিদের উৎপাদন খরচ বাড়বে। পাশাপাশি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। আমি আগামী আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করব।
বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জোনাল ম্যানেজার আহসান হাবীব বলেন, ‘ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধে আমরা স্থানীয় হাট-বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি। ট্রান্সফরমার চুরির সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণাও করা হয়েছে।