কানাইঘাটে একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন।
বাঙালি ও বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে আত্ম-অন্বেষায় যে চেতনার উন্মেষ ঘটে তারই পরিক্রমায় পূর্ব বঙ্গের রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নভেম্বর- ডিসেম্বর মাসে ভাষা বিক্ষোভ শুরু হয়।১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে সীমিত আকারে আন্দোলন শুরু হয় এবং ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী তার চরম বর্হিপ্রকাশ ঘটে।
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র বাংলা ভাষায় কথা বলা ও সাহিত্য রচনাকারী এবং সর্ব সাধারণ জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন ২১শে ফেব্রুয়ারী।এই দিনটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও একান্ত পরিচিত। বাংলাদেশীদের কাছে মর্মান্তিকও মহিমান্বিত দুঃখ স্মৃতি বিজড়িত একটি দিন হিসাবেও চিহ্নিত হয়ে আছে।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী (বাংলা ১৩৫৮ সালের ০৮ ফাল্গুন, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পাকিস্তানি পুলিশ গুলি বর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে কয়েকজন ভাষাপ্রেমী তরুণ শহীদ হন এবং তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রফিক, সালাম,জব্বার, শফিউল, বরকতসহ নাম না জানা অনেকেই। তাই বাংলাদেশের সমগ্র জনগণ এই দিনটিকে ‘শহীদ দিবস’ হিসাবে পালন করে থাকে।
পরবর্তীতে ২০১০ সালে জাতিসংঘের গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারী বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও পালন হয়ে আসছে।
আজ মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে যথাযথভাবে ভাবগাম্ভীর্যের সাথে উদযাপন করছে।তারই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, জেলা,উপজেলা, স্কুল, কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ দেশের আপামোর জনগণ ২১শে ফেব্রুয়ারী ‘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস -২০২২ উপলক্ষে শহীদ মিনারে প্রশ্ন প্রহরে রাত ১২ টায় ০১ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানা ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরছে।
একুশের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিটে কানাইঘাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মোমিন চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জী,কানাইঘাট থানা অফিসার্স ইনচার্জ তাজুল ইসলাম পিপি এম পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।এরপর কানাইঘাট প্রেসক্লাবের পক্ষে আলিম উদ্দীন, পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এরপর আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।শহীদ দিবসের আজকের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাত ফেরি, পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা ও বিশেষ দোয়া।