নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য স্বামীকে ৩ কোটি টাকা দিয়েছে সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রীর অভিযোগ।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভার শ্যামলী আবাসিক এলাকার রেজওয়ানা চৌধুরী নিরমা।নির্যাতন থেকে বাঁচতে স্বামীকে তিন কোটি টাকা দিয়েছে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন স্ত্রী নিরমা। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় এক সাংবাদ সম্মেলন করেন নিরমা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রেজওয়ানা চৌধুরী নিরমা জানান, তিনি তার পিতার একমাত্র কন্যা। তার পিতার সম্পত্তির প্রতি তার স্বামীর লোভ হওয়ার কারনে পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়, সেই সাথে তার স্বামী শফিউল্লাহ উরফে উজ্জ্বল তাকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে ।
তিনি জানান, তার মায়ের নামে থাকা ব্যাংক এফডিআর ও নিজের নামে থাকা ব্যাংক এফ ডি আর ভেঙ্গে বিভিন্ন সময়ে তার স্বামীকে প্রায় তিন কোটি টাকা দিয়েছেন। এখন সে আরো টাকার জন্য চাপসৃষ্টি করতে থাকে এবং নানাবিধ শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্বামীর হাত থেকে বাঁচার জন্য ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশ এনে তিনি তার হাত থেকে প্রাণে বাঁচেন। এবং স্বামীকে ডিভোর্স দেন।
এ ঘটনায় তার ডির্ভোসী স্বামী ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার বৃ-দেবস্থান গ্রামের শফিউল্লাহ অরফে উজ্জ্বল এর উপর মামলা করেন। বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে।
তিনি বলেন, মামলার পর তার বাবার বাড়ির পরিচিত এক ব্যাক্তি শ্রীমঙ্গল নুরফুডস এর ম্যানেজার মো: সাইফুল ইসলামকে জড়িয়ে ঢাকা ভাটারা থানায় গাড়ি চুরির মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গাড়ি তার মায়ের বাসায় রেখে যায় মামলার বাদীর ভাই তার সদ্য তালাক দেয়া স্বামী শফিউল্লাহ উরফে উজ্জ্বল।
যার সিসিটিভির ফুটেজ শ্রীমঙ্গল শহরের একাধিক জায়গায় সংরক্ষিত আছে। মামলার বাদী গাড়ির মালিকও নয়। তাছাড়া যাকে মামলায় জড়িয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে সে এ বিষয়ে কোন কিছুই জানে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। যে সময়ে ঢাকা থেকে গাড়ি চুরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে সে সময়ে সে শ্রীমঙ্গলে নুরফুডসের ক্যাশে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছিল।
যার সিসিটিভির ফুটেজেও সংরক্ষিত আছে। কিন্ত পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা এই ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে একজন নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আদালতের প্রতি অনুরোধ করেন এই মিথ্যা মামলা থেকে একজন নিরপরাদ মানুষকে জামিন প্রদান করে এ ঘটনায় প্রকৃত চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রেজয়ানা চৌধুরীর মা ফরিদা এফ এ চৌধুরী বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন।
এই স্বাধীন দেশের পুলিশ তদন্ত না করে কাউকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করবে এটা ভাবতেও পারিনি। তিনি বলেন, মেয়ে ও নাতির দিকে তাকিয়ে একজন মাদকাসিক্তকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছি। আমরাকি এর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারিনা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রেজওয়ানা চৌধুরীর ছেলে শেখ মোহাম্মদ সাদমান সালেহিন জিয়ন বলেন, এই গাড়িটি চড়ে তার বাবা মা সহ ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল এসেছে। বাবাই গাড়িটি তার নানুর বাসায় রেখে গেছে। তাহলে অন্য একজন গাড়িটি কিভাবে চুরি করলো এটা মিথ্যা ঘটনা। এ সময় জিয়ন আরো বলে নেশা করে তার বাবা তার মাকে মারধর করে টাকা চায়। এটা তার ভালো লাগেনা।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার এস আই আসাদ জানান, এ ব্যাপারে রেজওয়ানা চৌধুরীর দায়েরকৃত নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলার আসামীকে ধরতে তারা ঢাকায়ও অভিযান করে এসেছেন কিন্তু তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মামলার আসামী আগেই পালিয়ে যায়।
গাড়িটির ব্যাপারে তিনি বলেন এটা ঢাকা ভাটারা থানার মামলা। ওরা আমাদের কাছে কোন তথ্য চাইলে আমরা গাড়িটির অবস্থানের বিষয়ে সত্যতা বলতে পারবো।
এ ব্যাপারে ঢাকা ভাটারা থানার এস আই হাফিজ জানান,ভাটারা থানায় একটি গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে এ মামলায় শ্রীমঙ্গল রেজওয়ানা চৌধুরীর মায়ের বাসার সামনে থেকে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশকে নিয়ে চুরির অভিযোগকৃত গাড়িটি উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় মামলার এজহার নামীয় একজন আসামীকেও আটক করা হয়। তবে শ্রীগ্রই ন্যায় বিচার প্রাপ্তির স্বার্থে তদন্ত করে সঠিক প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।