ভালোবাসা দিবসে ঠাকুরগাঁওয়ে কে হবে অনলাইন সাংবাদিকদের নেতা।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী ভালোবাসা দিবসে ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন ঘিরে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা আলাপ-আলোচনা। ভোটারদের মনে প্রশ্ন ভালোবাসা দিবসে আয়োজিত এবারের নির্বাচনে কে হচ্ছেন অনলাইন সাংবাদিকের নেতা।
১৩টি পদের মধ্যে তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এরমধ্যে সভাপতি পদে দুইজন যথাক্রমে আব্দুল আউয়াল ও জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে শাকিল আহমেদ ও আব্দুল্লাহ আল সুমন এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রহিম শুভ ও আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অবশিষ্ট ১০টি পদে একক প্রার্থী থাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষনা করেন।
শনিবার সংগঠনের বিভিন্ন ভোটারদের সাথে আলাপকালে এমনি কথা উঠে আসে। তবে ভোটারদের দাবি- শিক্ষিত, সাংবাদিকতায় দক্ষ ও সংগঠনকে যে ভালোবাসবে তাকেই করা হোক অনলাইন সাংবাদিকদের নেতা।
জানা যায়, চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি সংগঠনের উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মোস্তাক আলম টুলু ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করেন। তপশীলে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করা হয় আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী।
২৭ তারিখ সংগঠনের ১৩ টি পদে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেন আগ্রহী প্রার্থীরা। এরমধ্যে সভাপতি পদে আল মাহমুদুল হাসান বাপ্পী, আব্দুল আউয়াল ও জহিরুল ইসলাম। সহ-সভাপতি পদে তারেক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক পদে শাকিল আহমেদ ও আব্দুল্লাহ আল সুমন, সহ-সধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জুনাইদ কবির, অর্থ সম্পাদক পদে নাহিদ রেজা, দপ্তর সম্পাদক পদে জুয়েল ইসলাম শান্ত, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আসিফ জামান, ক্রীড়া সম্পাদক পদে সুজন আলী, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পদে রহিম শুভ ও আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী এবং নির্বাহী সদস্য পদে রহিম উল আলম খোকন, মাজেদুর রহমান ও আব্দুল আজিজ আরিফ মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন।
২৯ জানুয়ারী মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিনে ১৩টি পদে প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন ; তবে সভাপতি পদে ৩ জন মনোনয়ন ক্রয় করলেও আল মাহমুদুল হাসান বাপ্পী মনোনয়নপত্র দাখিল করেনি। বাকি অন্যান্য পদে সকল প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
পরে ৩০ জানুয়ারি মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই শেষ হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে দুইজন যথাক্রমে আব্দুল আউয়াল ও জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে শাকিল আহমেদ ও আব্দুল্লাহ আল সুমন এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রহিম শুভ ও আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও অন্যান্য ১০টি পদে একক প্রার্থী থাকায় তাদেরকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষনা করে চুড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মোস্তাক আলম টুলু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন চায়ের দোকানে চায়ের আড্ডায়সহ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাচ্ছন প্রার্থীরা। ভোটারদের দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি। একদিকে যেমন থেমে নেই প্রার্থীরা অপরদিকে চিন্তিত ভোটাররাও। মনে প্রশ্ন তাদের মধ্যে কে হবে এই সংগঠনের আগামীর নেতা। এমনি ভিন্ন প্রশ্ন যেন ভোটারদের মধ্যে।
সংগঠনের সফল সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল। তিনি এবারের নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি প্রতিটি সময় সকল সহকর্মীর পাশে ছিলাম ও এখনও আছি। সভাপতির চেয়ার মূল বিষয় নয়, বিষয়টি হলো আমি সংগঠনকে ভালোবাসি। আমি আগেও সকলের পাশে ছিলাম আগামীতেও থাকবো। আমি ভোটারদের সাথে কথা বলছি। তারা আমাকে চাচ্ছেন। আশা করছি আমি সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হবো। আমি নির্বাচিত হলে সংগঠনের উন্নয়ন সবসময় কাজ করবো এবং সদস্যদের যে কোন বিপদে পাশে থাকবো।
সংগঠনের বর্তমান সদস্য এবং এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরেই সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত আছি। ইতিমধ্যে আমি প্রতিটি ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের কাছে ভোট চেয়েছি। তারা আমাকে সারা দিয়েছে। আমি শতভাগ আশাবাদী ভোটাররা আমাদে বিজয়ী করবে। আমি যদি বিজয়ী হই তাহলে সংগঠনের সকল সদস্যদের পাশে থাকবো এবং সংগঠনের উন্নয়নে কাজ করবো।
এই সংগঠনের সবথেকে পরিচিত মুখ এবং সংগঠনের তিন বারের সফল সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ। বর্তমান কমিটিতেও তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তার হাত ধরেই সংগঠন সবসময় তরান্বিত হয়েছে এবং সংগঠনের উন্নয়নে সবসময় কাজ করেছে। যে কোন সদস্যের বিপদে সবসময় পাশে থেকে এই নেতা। এবারের নির্বাচনে পূণরায় শাকিল আহমেদ সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শাকিল আহমেদ বলেন, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কমিটিতে আমি সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছি। এর পরের কমিটিতে সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করি। এরপর থেকে পর পর আরও দুইবার ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সংগঠনকে গতিশীল করার জন্য। সেই সাথে সংগঠনের উন্নয়ন সবসময় কাজ করেছি এবং সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়েছি। এবারের নির্বাচনেও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমার বিশ্বাস সংগঠনের স্বার্থে সদস্যরা আমাদের পূণরায় নির্বাচিত করবে। আবারও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে সংগঠনের উন্নয়নে সর্বোচ্চ ভুমিকা পালন করব এবং সদস্যদের পাশে অতীতে যেভাবে ছিলাম সেভাবেই থাকবো।
সংগঠনের সদস্য এবং এবারের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল সুমন বলেন, আমি বিভিন্ন ভোটারদের সাথে কথা বলেছি তারা আমার পক্ষে রয়েছে। ভোটাররা আমার পাশে থাকলে আমি অবশ্যই বিজয়ী হবো। আমি যদি বিজয়ী হই তাহলে চেষ্টা করবো সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করার।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুইজন রহিম শুভ ও আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পীও আশাবাদী তারা বিজয়ী হবে। তারা বিজয়ী হলে সংগঠনের উন্নয়নে কাজ করে যেতে চান।
সংগঠনের সদস্য আরমান হোসেন ও ওয়াদুদ হোসেন বলেন, নির্বাচনে সভাপতি পদে দুইজন, সাধারণ সম্পাদক পদে দুইজন এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আমরা সাধারণ ভোটার, আমরা চাই এমন একজন নেতাকে যে সংগঠনের স্বার্থে কাজ করবেন। আমাদের দেখে শুনে রাখবে। আমাদের কোন সদস্য যদি কোন সমস্যায় পড়ে সেটি গুরুত্ব সহকারে দেখবে। তবে মূল যে বিষয়টি হলো তাকে সাংগঠনিক ও শিক্ষিত হতে হবে। যাতে যে কোন পরিস্থিতিতে সংগঠনের সাথেই থাকতে পারে এবং সংগঠনে উন্নয়ন কাজ করবে। এবারের নির্বাচনে স্বচ্ছ, সৎ ও পরিশ্রমি মানুষকেই আমরা নির্বাচিত করবো।
সংগঠনের বর্তমান কমিটির সভাপতি তানভির হাসান তানু বলেন, দুইবছর আমি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি চাই এবার নতুনরা আসুক, তাই এবারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি যেই নির্বাচিত হোক, তাকে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে এই পদটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি সংগঠনের স্বার্থে বলবো একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি এই পদের দায়িত্বে আসুক।
সংগঠনের উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মোস্তাক আলম টুলু বলেন, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের নির্বাচন। ১৩টি পদের মধ্যে নির্বাচনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পদে দুইজন করে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অবশিষ্ট ১০টি পদে একক প্রার্থী থাকায় তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষনা করা হয়। সংগঠনে ভোটার সংখ্যা ৪৯ জন। আশা করছি সুন্দর পরিবেশ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন শেষ হবে। সেই সাথে সংগঠনের সদস্যরা তাদের নেতৃত্বকে নির্বাচিত করবে।