তানোরে প্রেমিককে আটকে রেখে কাউন্সিলরের মাধ্যমে রফাদফার চেষ্টা।
রাজশাহীর তানোরে প্রেমিক কে তিন ধরে আটকে রেখে বিয়ের জন্য চলছে দুই কাউন্সিলর আরব আলী ও মুন্জুর রহমান এবং নামধারী যুবলীগ নেতা টুটুল রফাদফা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পৌর এলাকার ভক্তিপুর গ্রামে প্রেমিকার বাড়িতে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। গত বুধবার রাতে প্রেমিক উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির মোহাম্মাদ পুর দক্ষিন পাড়ার তোফাজ্জুল হোসেনের কলেজ পড়ুয়া ছাত্র মারুফ তানোর পৌর এলাকার ভক্তিপুর গ্রামের জৈনক ব্যক্তির কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকার সাথে দেখা করতে আসলে বন্ধু রাকিবের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন বলে জানান প্রেমিক মারুফ। এদিকে পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করার নামে ছেলের অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পালিয়ে যান যুবলীগ নেতা টুটুল। এমনকি প্রেমিক মারুফ কে নির্যাতনও করা হয়েছে।
সরেজমিনে শুক্রবারে প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় গ্রামের অনেক লোকজন বাড়িতে। তারা জানান জুম্মার নামাজ পর ছেলের পরিবারের লোকজন আসলে বিয়ে দেওয়া হবে,আপনারা থাকেন আরব ও মুন্জুর কাউন্সিলর সব ব্যবস্হা করে দিবেন।
প্রেমিক মারুফ ঘরের ভিতরে শুয়ে ছিলেন।তিনি জানান আমাদের প্রেম দীর্ঘ চার বছর ধরে চলছে।আমাদের দৈহিক মিলনও হয়েছে। আমি রাজশাহীতে পড়ালেখা করি,এবং আকচা স্কুলে নানার বাড়ি বানিয়াল গ্রামে থেকে পড়ালেখা করেছি।আমি গত বুধবারে সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী থেকে প্রেমিকার সাথে দেখা করার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলাম।একটু পর আমাকে একজন টার্গেট করে।আমি তখন বন্ধু রাকিবের বাড়িতে যায়।সেখান থেকে তুলে এনে আমাকে নির্যাতন করে আটকে রেখেছে। আমার সামনে এইচএসসি পরিক্ষা। আমাদের কথা হয়ে আছে পরিক্ষার পর বিয়ে করব।এর মধ্যেই তারা পরিকল্পিত ভাবে আমাকে এসব করছে।
মেয়েকে কোন কথা বলতে দেয়নি আমাদের সাথে। তবে পরিবারের একাধিক মহিলারা জানান ছেলেকে আমরা আদর যত্নে রেখেছি।বিয়ে করলেই ছাড় দেওয়া হবে এমন কথা বলে দিয়েছেন কাউন্সিলর আরব আলী ও মুন্জুর রহমান। তারা বলেছে জুম্মার নামাজ শেষে বিয়ে দেওয়া হবে।
ওই ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা মুন্জুর জানান, বিয়ে দেওয়ার জন্য আমি আরব ও টুটুল মিলে চেষ্টা করছি।টুটুল কে প্রশাসন ও স্হানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের ম্যানেজ করার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। আপনি এভাবে ছেলেকে তিনদিন ধরে আটকে রাখতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান গত বৃহস্পতিবারে বিয়ে হয়ে যেত।কিন্তু আরব মাতাল অবস্থায় এসে সব কিছু উলট পালট করে দেয়।মাতালের সাথে থাকা মানে নিজের ইজ্জত খাওয়া। আর বাটপার টুটুল টাকা পাওয়ার পর থেকে কারো ফোন ধরছেন না।যত খুশি লিখেন বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন এই কাউন্সিলর।
আরব আলী জানান, বুধবার রাত থেকে চেষ্টা করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বিয়ে হওয়ার কথা। কিন্তু ছেলে এখন রাজি হচ্ছেনা।এজন্য আমি চলে এসেছি। কারন এসব আইনের ব্যাপার। এজন্য কাউন্সিলর মুন্জুরকে থানায় পাঠিয়েছি।আইনের হাতে না দিয়ে আপনি এভাবে আটকে রাখতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান একটা ছেলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া অপরাধের কিছু না।বিয়ে করবে বলেই এভাবে রাখা হয়েছে , এখন করবে না এজন্য চলে এসেছি। শুক্রবারে আরব আলীর মোবাইলে একাধিক বার ফোন দিলেও রিসিভ করেন নি।
গ্রামের বেশ কিছু ব্যক্তিরা জানান,অপরাধ করলে আইনের হাতে দিতে হবে।মেয়েকে ছেলের সাথে বিয়ে দিতে পারলে দুই কাউন্সিলর ও টুটুল ভালো নারায়ন পাবেন।ছেলে রাকিবের বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে গিয়ে এসব পরিকল্পনা করছেন দুই কাউন্সিলর।
থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রাকিবুল হাসান জানান কাউন্সিলর আরব আলী দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনদিন ধরে এভাবে আটকে রাখা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান আমার বদলি হয়ে গেছে বিকেলে চলে যাব।তারপরও লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।