আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়া সুস্থ্য হওয়ায় বিএনপি নেতারা অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। তাদের নেত্রীকে বিদেশে পাঠানোর দাবীতে সারাদেশে সমাবেশ করেছে। কিন্তু তিনি সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এখন তারা কি বলবেন। এ কারণে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন।
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সমগ্র পৃথিবী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অথচ বিএনপি নেতাদের উন্নয়ন চোখে পড়ে না। ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবলীলায় মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। গয়েশ্বর বাবু আর রিজভীও বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা বলছেন।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার অর্জনের পর অনেকে বলেছিল বাংলাদেশে মাথাপিছু এক হাজার ডলার আয় করতে একশো বছর সময় লাগবে। আজকে ৫০ বছরে মাথাপিছু আয় গিয়ে পৌছেছে আড়াই হাজার ডলারে। মাথাপিছু আয়ে আমরা ভারতকে ছাড়িয়েছি, ২০১৫ সালে পাকিস্তানকেও ছাড়িয়েছি।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথম ক্ষমতায় এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশে কোন কুঁড়েঘর থাকবে না। এখন আর কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া যায় না। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে চেরাগ, ল্যাম্প আর হ্যাজাক যাদুঘরে চলে গেছে। সব কিছু শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বের ফলে সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলাম। তখন অনেকের কাছেই বিষয়টি হাস্যকর মনে হয়েছিল। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবে পরিণত হেয়েছে। ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ কোটি মোবাইল, ১২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, সাড়ে ৮ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। ঘরে বসে মোবাইলেই স্কুল-কলেজে ভর্তি হয় শিক্ষার্থীরা।
আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে শ্রমিকের মজুরী বেড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এক সময় বামরা আন্দোলন করতো শ্রমিকের মজুরী হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের সমান। এখন শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে শ্রমিকের মজুরী দাঁড়িয়েছে ১২ কেজি চালের সমান।
জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, আমার শহর আমার গ্রাম” আজ শহরের সুযোগ সুবিধা গ্রামে চলে গেছে। দেশের পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিটি মানুষের পরিবর্তন হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হাসান মাহমুদ বলেন, এত উন্নয়ন আমাদের দলের কতিপয় নেতাকর্মী যারা ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ করবে, যারা জায়গা দখল করবে তাদের কারণে ম্লান হবে সেটি হতে পারে না। যারা পিঠ বাঁচাতে, সম্পদ রক্ষা আর সম্পদ অর্জন করতে আওয়ামীলীগ করবে তাদের দলে দরকার নেই। টাকার জোরে যারা নেতা হতে চায় তাদের নেতা বানানোর কোন দরকার নেই। যারা দু:সময়ে দলের সাথে ছিল তাদেরকে নেতা বানাতে হবে।
সিরাজগঞ্জ শহরের শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কে, এম হোসেন আলী হাসান।
পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক মোল্লার পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামীলীগের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, নির্বাহী সদস্য, মেরিনা জাহান কবিতা এমপি, সদস্য আব্দুল আওয়াল শামীম, অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, তানভীর শাকিল জয় এমপি ও অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য্য, বিমল কুমার দাস, পৌর মেয়র আব্দুর রউফ মুক্তা ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আসাদ উদ্দিন পবলু।