ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে রাতে মাঝারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ফসলসহ বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে প্রাণীকূলেও।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি)জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে ফসলের মাঠের খবর নিয়ে জানা যায় আগাম গমের ক্ষেত ঝড়ো বাতাসের কারণে মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমেছে। মাঠে কাজ করতে দেখা যায়নি কোন শ্রমিককে। এছাড়াও সরিষা,ভূট্টাসহ সব ফসলই বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও দেখা যায়, দমকা হাওয়ায় উড়ে গেছে দরিদ্র মানুষের টিনে ছাউনির বসতি ঘর । সেগুলো মেরামত করছেন মানুষজন।
ধর্মগড় ইউনিয়নের কৃষক সোলেমান আলী জানান, এবারে ২ বিঘা জমিতে আগাম গমের আবাদ করেছেন তিনি। তার গম দানা বাঁধতে শুরু করেছে। কিন্তু গত মধ্যরাতের মাঝারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে তার গমের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। গম মাটিতে নুইয়ে পড়েছে।
স্থানীয় আলুচাষি সুমন মিয়া বলেন, ৭ বিঘা মাটিতে আলু উৎপাদন করেছি। আজ আলু উত্তোলনের কথা ছিলো। এখন বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।
দিনমজুর রহিম মিয়া বলেন, আলুর কাজে এসেছিলাম। দেখি আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। তাই কাজ বন্ধ। তাই ফিরে যাচ্ছি।
স্থানীয় মানিকের ঘরও দমকা হাওয়ায় উড়ে গেছে, তিনি ঘর মেরামত করছেন। এসময় তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এনজিও থেকে লোন নিয়ে টিনের ঘরটি বানিয়েছি। বাতাসে টিন উড়ে গেছে। সেগুলো আবার কুড়িয়ে এনে ঘর মেরামত করছি।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, রাতে ৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সাথে দমকা বাতাস। এতে আগাম গমের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে এবং কৃষিকাজ ব্যহত হয়েছে। কৃষকরা এখন আলু ক্ষেতে পানি না শুকানো পর্যন্ত আলু উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকবে, সেই সাথে সার কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ রাখবে। এখন সবচেয়ে জরুরি জমাট পানি ক্ষেত থেকে বের করার ব্যবস্থা করা।
উল্লেখ্য যে, আজ (শুক্রবার) পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর কাছাকাছি তাপমাত্রা বিরাজ করছে ঠাকুরগাঁও জেলায়। দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি বাড়িয়েছে শীতের তীব্রতা। এমন অবস্থায় কর্মহীন হয়ে আজ ঘরবন্দী মানুষ। গবাদি পশুসহ প্রাণীকূলেও এর চরম প্রভাব পড়েছে।