ঠাকুরগাঁওয়েও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ৩৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৫০ দশমিক ৬৮, তবে কেউ মারা যাননি। আজ ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন কার্যালয়
সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গতকাল শনিবার ৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল, শনাক্তের হার ছিল ১৫ দশমিক ১৫। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে করোনা শনাক্ত প্রতিদিন বেড়ে চলেছে, শনাক্তের হারও বাড়ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র মতে, ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ওই বছর জেলায় ৮ হাজার ১৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ৪৮১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ১৫ , করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৯ জন।
২০২১ সালে ৬ হাজার ২২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ওই বছর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২১৩ জন। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ হাজার ৭০৫। করোনায় মোট মারা যান ২৪২ জন। আর চলতি ২০২২ সালে আজ পর্যন্ত ৫৩৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৯১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে, নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৮।
করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার থেকে সারা দেশে সার্বিক কার্যাবলি ও চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। কিন্তু এরপরও ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের মধ্যে উদাসীনতা দেখা গেছে। শহরের হাটবাজারগুলোতে মানুষকে সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলাচল করতে দেখা গেছে। অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। আবার যাঁরা মাস্ক ব্যবহার করছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিয়ম মেনে ব্যবহার করছেন না।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মানুষের উদাসীনতা নিয়ে বিচলিত রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম । তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ ছাড়া প্রায় সবকিছুই স্বাভাবিক সময়ের মতো চলছে। চলাফেরা করা অধিকাংশ লোকজনের গা ছাড়া ভাব। স্বাস্থ্যবিধি মানাতো দূরের কথা, মাস্ক পর্যন্ত ব্যবহার করছেন না। মানুষের এমন উদাসীনতা করোনা পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলতে পারে।
সাবেক সিভিল সার্জন আবু মো. খায়রুল কবির বলছেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে মাস্ক পরতেই হবে। মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না। মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির প্রতি উদাসীনতা যত বাড়বে, সংক্রমণের হার তত বাড়বে।
সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন নূর নেওয়াজ আহম্মেদ বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। মানুষের মধ্যে উদাসীনতা করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার অন্যতম কারণ। পাশাপাশি মাস্কের ব্যবহার কমে আসা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ না করাও সংক্রমণ প্রবণতা বাড়ার কারণ। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষায় তিনি সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা, মাস্কের যথাযথ ব্যবহার ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
Post Views: 195