নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ ধান, সরিষা ও সবজি চাষ বাদ দিয়ে বিদেশী জাতের কুল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পৌর শহরের চরঘাটিনা গ্রামের আদর্শ কৃষক মোঃ ফজলুল হক। বৃহস্প্রতিবার সকালে সরেজমিন তার বাগানে গিয়ে দেখা যায় চাষ করা সারি সারি কুল বরোইয়ের গাছ। গাছগুলো আকারে ছোট ও ঝাপটা । গাছে গাছে ঝুলছে আকর্ষনীয় সিডলেস ও বল সুন্দরী লোভনীয় কুল। কুলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালগুলো।গাছের ফলগুলো সুরক্ষার জন্য বাঁশের ঠেস দেওয়া হয়েছে পাখি থেকে সুরক্ষার জন্য উপর দিয়ে টাঙ্গনো হয়ে ছোট পাশের জাল। রাস্তার পাশে কুলবাগানের দিকে পথচারীদের দৃষ্টি। আকর্ষণ করছে দৃষ্টি নন্দন ও মন জুড়ানো বিদেশী জাতের মিষ্টি কুলের বাগান।
উল্লাপাড়া পৌরসভার চর ঘাটিনা গ্রামের কৃষক ফজলুল হক এবছর তার দুই বিঘা জমিতে বিদেশী জাতের সিডলেস ও বল সন্দুরী কুলের চাষ করেছেন।তার বাগানে সিডলেস ও বল সন্দুরী উভয় জাতের ৮০টি করে কলমের চারা রোপন করেছেন।
তিনি এই কলমগুলো প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে সংগ্রহ করেছেন। ঝাপড়া গাছগুলোতে প্রচুর পরিমানে সুমিষ্ট কুল বরোই ধরেছে। দেখতে কিছুটা পাকা আপেলের মতো থোকায় থোকায় শোভা পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ফল পাকতে শুরু করেছে এবং বাজারজাত করন শুরু হয়েছে।
চরঘাটিনা গ্রামে দৃষ্টিনন্দন কুল বাগানের মালিক আদর্শ কৃষক মোঃ ফজলুল হক জানান,বিদেশী কুল চাষে ভালো সাফল্যের আশায় তিনি তার জমিতে ধান, সরিষা ও সবজি চাষের পরিবর্তে প্রথমবারের মতো কুল চাষ করেছেন। বিদেশী জাতের এই কুল গাছগুলো সংগ্রহ ও রোপন করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এসব কুলগাছ ৫ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। প্রত্যেক মৌসুমে সিডলেস জাতের প্রতিটি গাছ ৩০-৩৫ কেজি ও বল সুন্দুরী জতের প্রতিটি গাছ ৭৫-৮০ কেজি পরিমান কুল দিয়ে থাকে।চলতি কুল মৌসুমে তার কুল থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। বর্তমানে তিনি সিডলেস কুল বিক্রি করছেন ৪০০০-৪২০০ টাকা মন ও বল সুন্দরী বিক্রি করছেন ২০০০-২২০০’শ টাকা মন দরে বিক্রি করা যায়।বিক্রির জন্য হাট-বাজারে যেতে হয় না,ব্যাপারি বাগানে এসে নিয়ে যায়।এই জাতের কুল খেতে মিষ্টি ও স্বাদে ভরপুর।ইতিমধ্যে এ জাতের কুল দ্বিগুণ চাহিদা বেড়েছে। এদিকে ফজলুল হকের কুল চাষের সাফল্যে পার্শ্ববর্তী এলাকার যুবক ও বেকার ছেলেরা কুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।বেশি পরিমান জায়গা নিয়ে বড় বাগান কয়েকজন কৃষি শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
কুলবাগানে কর্মরত শ্রমিক সোহেল রানার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এই কুল বাগানে কাজ করার সুযোগ পেয়ে দুথটি পয়সা আয় করতে পারছেন।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন(সুমি)জানান, ইতোমধ্যে তিনি তার অফিস স্টাফ সাথে নিয়ে ফজলুল হকের ভারত থেকে নিয়ে আসা সিডলেস ও বল সুন্দরী জাতের কুলবাগান পরিদর্শন করেছেন। এবছরই তিনি প্রথম কুল চাষ করেছেন। কুল চাষে তিনি বেশ সফল হয়েছেন। তাকে দেখে এলাকার বেকার যুবকেরা কুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ সময় তিনি আরো জানান, বেকার যুবকেরা কুল চাষ করলে তার দপ্তর থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।