রাজশাহীর তানোরে ঐতিহ্য বাহী বিল কুমারী বিলের বন্যা নিয়ন্ত্রিত বাঁধ হুমকিতে ফেলে মোহনপুর সীমানায় রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাধের নিচের মাটি ভেকু বা স্কেলেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সেই মাটি বাধে দেওয়ার কারনেই হুমকিতে পড়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
শুধু তাই না ভেকু মেশিনে মাটি কাটতে গিয়ে বাঁধের গাছপালা উজাড় হয়ে পড়েছে। ফলে কোটি টাকা ব্যয়ের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরাদ্দের একজনের সুবিধার জন্য,বাকিটা পানিতেই যাবে বলে মনে করছেন স্হানীয়রা।আবার বাধে রাস্তা নির্মাণ নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কারন ক্ষমতাসীন দলের এমপি আয়েন উদ্দিন পাখির অভয়াশ্রমের ধোয়া কথা বলে তার চমৎকার যাদুতে আগেই বিল পুকুরে রুপান্তর হয়ে পড়েছে। তিনি সেখানে আলিশান কার্যালয় গড়ে তুলেছেন। মুলত তার এক প্রকার সুবিধার জন্যই ঝুঁকি পূর্ন এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।এছাড়াও বিল সংলগ্ন বাধ কেটে মেলান্দি গ্রামের অখিল অভায়সহ অনেকেই বাঁধের গাছ কেটে দেদারসে পাকা দালান বাড়ি নির্মাণ করছেন।পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে চলে এসব কাজ বলেও রয়েছে অহরহ অভিযোগ ।
জানা গেছে, তানোর সীমানা বেয়ে বয়ে চলা বিল কুমারী বিল এবং মোহনপুর সীমানায় শ্যানার ও মাইলার বিলের মাঝে দিয়ে আশির দশকের দিকে কৃষকের ফসল রক্ষার জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ নির্মাণ করা হয়।সুফল ভোগ করে দুই উপজেলার হাজার হাজার কৃষক এবং রক্ষা পায় অনেক গ্রাম । কিন্তু গতবার মোহনপুর পবা আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন বিলের জমিতে পুকুর করেন।তিনি পুকুর পাড়ে বা বাঁধ সংলগ্ন জায়গায় গড়ে তুলেছেন আলিশান ভবন।সেই ভবনে প্রায় দিন বাঁধ কেলে রান্নাবাড়া চলে।এভবন থেকে দক্ষিনে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাধের নিচ থেকেই ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে বাঁধের উপর দেওয়া হচ্ছে মাটি। যার কারনে চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে বাঁধ। এই বিশাল প্রকল্পে জনগনের খুব একটা লাভ না হলেও এমপি আয়েন উদ্দিনের ভালোই হবে বলে মনে করা করছেন অনেকেই।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দ প্রায় দু কোট টাকা।কাজটি করছেন রাজধানী ঢাকার সোহেল নামের ঠিকাদার। তবে তিনি কাজের জায়গায় আসেন না।সম্প্রতি কয়েক দিন গিয়ে দেখা যায় বাঁধের নিচের মাটি কাটছে।চালকের কাছে জানতে চাওয়া হয় কাজের লোকজন কোথাও তিনি সরাসরি জানান আমি কিছুই জানিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু ব্যক্তিরা জানান এপ্রকল্প একমাত্র এমপির সুবিধার জন্য। তিনি পাখির অভয়াশ্রমের কথা বলে বিল করেছেন পুকুর।পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তা করার এত ইচ্ছে অন্য জায়গা রেখে এখানে কেন।এমপিদের বিরুদ্ধে কিছুতো বলা যাবে না।তার পুকুর খননের আগে পাকা রাস্তা একেবারেই নষ্ট করা হল।আবার কয়েকদিন আগে পুনরায় সে রাস্তা নির্মাণ করা হল।এটাই ক্ষমতা।
কাজের বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের( পওর) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখের কাছে কাজের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান বাঁধে রাস্তা নির্মাণ করতে পাটি পাব কোথায়। এজন্য আমাদের সীমানা থেকে নেওয়া হচ্ছে। এজন্য কি বাঁধ হুমকিতে পড়বে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন আপনি মাটি দেন।বাঁধের ক্ষতি হলে আমরা দেখব।একাজের সাথে বড় ব্যাক্তিরা জড়িত আছে।গাছ কাটার কথা বলা হলে তিনি দম্ভোক্তি প্রকাশ করে বলেন গাছ কেন ওই রাস্তা নির্মাণ করতে আরো কিছু করতে হলে করা হবে বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন দুই উপজেলার মধ্যে জায়গাটি বিনোদনের জন্য চমৎকার ।আর বেঁচে থাকতে হলে বিনোদনের অনেক প্রয়োজন। তবে পুকুর কাটা পাখির অভয়াশ্রমের বিষয়ে কিছুই বলতে রাজি হননি তিনি।