করোনার টিকা নিতে এসে বগুড়ার নন্দীগ্রামে শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীরা জুতা পায়ে ফটোসেশন করছেন। কেউ কেউ জুতা পায়ে শহীদ মিনার বেদিতে বসে মোবাইল ফোনে গেমস আড্ডায় মেতেছে। আবার কোনো কোনো শিক্ষার্থীরা নির্বিঘে জুতা পায়ে ছোটাছুটি করেছে মূল বেদিতে।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলার পরিষদের পাশে অবস্থিত শহীদ মিনারে এমনিই চিত্র দেখা যায়।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত সোমবার থেকে নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে শুরু হয়েছে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি। এতে করে উপজেলার ১৪ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়া হবে। সেই করোনার টিকা নিতে এসে মঙ্গলবার বেলা ১১টা দিকে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদীতে উঠে ফটোসেশন করছেন। আবার কেউ কেউ জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে বসে মোবাইলে গেমস খেলছেন, আড্ডা দিচ্ছে। এতে করে ভাষা শহীদদের প্রতি মিনারের অবমাননা হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
শিক্ষার্থী আতিক হাসান বলেন, টিকা দিতে দেরি হচ্ছিল। প্রচন্ড ভীড়। বন্ধুদের সঙ্গে ঘোড়াফেরার সময় হঠাৎ করেই জুতা পায়ে উঠেছি। এটা আমাদের ভুল হয়েছে, বুঝতে পারিনি।
উপজেলার বিজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, এখানে অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা করোনার টিকা নিতে এসেছে। তবে শহীদ মিনারে জুতা পায়ে উঠা অত্যান্ত দু:খজনক। তারা ভুল করেছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, কেউ জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে উঠে তাহলে খুবই দু:খজনক ঘটনা। এটি দেশ ও জাতির জন্য লজ্জার।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহাদত হোসেন প্রামানিক বলেন, আজকে উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে। তবে যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার জুতা পায়ে উঠেছে। সেইসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের শোকজ করার জন্য শনাক্ত করা হচ্ছে।
এবিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শিফা নুসরাত বলেন, শিক্ষার্থীদের মনিটরিং এর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দেয়া হয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার অবমাননা করেছে, সেই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শোকজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।