নির্ধারিত সময়ের আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের। বারবার তাগাদা দিয়েও কাজ না হওয়ায় অবশেষে নির্মাণাধীন ভবনেই ২০২২ শিক্ষাবর্ষে চারটি বিভাগে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের জন্য নির্মিত একটি অস্থায়ী টিন শেডের বারান্দায় বসে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা।
নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে কার্যক্রম শুরু করতে অন্তত একটি ফ্লোর রেডি করে দেয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঢাকার মেসার্স ঢালি কনস্ট্রাকশন লিঃ নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়।
এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবনসহ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১৪ কোটি ৫১ লাখ ৭২ হাজার ৩৪৫ টাকা। ২০১৯ সালের জুন মাস নাগাদ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কয়েক দফায় আরও সময় চেয়ে আবেদন করে। সময় বাড়িয়ে কাজ সমাপ্তির সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা হয় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর।
এসময়ের মধ্যেও নির্মাণ কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এখন পর্যন্ত চার তলা বিশিষ্ট ভবনের শুধু ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগসহ দরজা জানালা ও আনুসাঙ্গিক কাজ বাকি রয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে আরও এক বছর সময় লাগবে বলে জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাঈদ হোসেন। তিনি বলেন, কাজ সমাপ্তির জন্য ২০২৩ সালে জানুয়ারি পর্যন্ত তাদেরকে সময় দেওয়া হয়েছে।
টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের তত্ত্বাবধায়ক মিলান হোসেন প্রধান বলেন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা ছাত্রছাত্রী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করেছেন। কিন্তু কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদারের লোকজনের থাকার ঘরের বারান্দায় বসে আপাতত কাজ চালাতে হচ্ছে। ঠিকাদারের লোকজন তাদের জানিয়েছেন, নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্লোরে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের আগামী ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু করার উপযোগী করে দিবেন।
এ বিষয়ে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম বলেন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর হঠাৎ করেই শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বলেছেন। কিন্তু এখানে ভবন নির্মাণ কাজ এখনো অনেকাংশেই বাকি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ভর্তি করা আসলেই একটি সমস্যা। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি ইকবাল বলেন, সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ শেষ করার সময় নির্ধারিত ছিল। একাধিকবার তাগাদা দেয়ার পরও এসময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় চলতি শিক্ষাবর্ষে কার্যক্রম শুরু করতে অন্তত একটি ফ্লোর রেডি করে দেয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।