প্রচার-প্রচারণায় বাধা, তাদের কর্মীর ওপর হামলা, অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে । তবে পাল্টা অভিযোগ করে নৌকার প্রার্থীরা বলছেন নিজেরাই নির্বাচনী অফিসে অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর ও পোষ্টার ছিঁড়ে তারা নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত করছে।
এদিকে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন, মোরটসাইকেল ভাঙচুর, দেশীয় অস্ত্রের মহড়া ও ছোট ছোট বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে বেড়ে চলছে সংঘাতের পরিমাণ। প্রতিদিনই কোনো না কোনো ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছেই।
ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, ২০টি ইউনিয়নে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৯৬০জন, তার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে ২০৯ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৬৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২০ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ২০ জন। বাকিরা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী।
এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি নির্বাচন করছেন।
প্রতিনিয়ত রিটানিং কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসছেন প্রার্থীরা। এরই মধ্যে গত বুধবার সন্ধ্যায় মেহেদি (১৬) নামে এক স্কুলছাত্র খুন হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা এটা নির্বাচনী সহিংসতা।
সদরের রহিমানপুর ইউনিয়নের বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্রসহ সবুর নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশ। আরেক ইউনিয়নে প্রায় ৪০টি রামদা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে আটক করতে পারেনি। এদিকে শুক্রবার বিকেলে সদরের সুখানপুখুরি ইউনিয়নে হামলার স্বীকার হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়জুল হক প্রধানের সমর্থকরা। এসময় প্রচার মাইক ভেঙ্গে ফেলা হয় বলে অভিযোগ ওই প্রার্থীর।
অন্যদিকে ২০নং রুহিয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, পোষ্টারে আগুন, কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রাথীর বিরুদ্ধে।
রাজাগাঁও ইউনিয়নে ভোটারদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে হুমকি দেয়া হচ্ছে অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর।
আকঁচা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা ঘোড়া মার্কার পোস্টার ছিঁড়ে তার কর্মী-সমর্থকদের প্রচারণায় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদশাহর।মোহাম্মদপুর, রায়পুর, ও বেগুনবাড়ি ইউনিয়নেও একই চিত্র।
গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে পীরগঞ্জ-বালিয়াডাঙ্গীর ১৮ ইউপি নির্বাচন হয়েছে। সেই আমেজ এখনও শেষ হয়নি। এখনো সেই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। পীরগঞ্জে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আবার গতকাল স্কুলছাত্র খুন ও বস্তাভর্তি অস্ত্র উদ্ধার সব মিলিয়ে একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে যা আগামী ২৬ তারিখের নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে বলে এমনটাই মনে করছেন সুশীল সমাজ।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আইন আইনের গতিতে চলবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তবে নির্বাচনে কোনো প্রকার সহিংসতার সুযোগ দেয়া হবে না উল্লেখ করে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান জানান, নির্বাচনের দিন অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা উপস্থিতি থাকবে। কোনো প্রকার সহিংসতার সুযোগ দেয়া হবে না। তাই সাধারণ ভোটারদের নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০টি ইউপিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৮৮ জন আর নারী ভোটার ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৪৫ জন।