আনোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
এক হাতে তার সরু বাঁশে বড় থেকে ছোট পতাকা বাঁধা। অপর হাতে ছোট ছোট কিছু পতাকা কাঠিতে ঝুলছে। বিজয় দিবস লেখা ফিতা মাথায় লাগানো। কৌতুহল বশত: তার সঙ্গে কথা হলো। জানতে পারলাম তার দেশপ্রেমের কথা। শুধুমাত্র দেশের প্রতি মমত্ববোধ ও শ্রদ্ধা রেখে বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় তিনি পতাকা হাতে ছুটে চলেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলা পতাকার ফেরিওয়ালা মো.রুহল ইসলাম (৫০)।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ কেন্দ্রীয় শহীদমিনার চত্বরের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন একাগ্রচিত্তে। একমনে তাকিয়ে দেখছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবিটি। দূর থেকে তার চেহারা দেখেই বুঝা যাবে মনে হয়তো অনেক প্রশ্ন জমে আছে। ঠাকুরগাঁওয়ের আঞ্চলিকতার কোনো ছাপ না থাকায়, বুঝা গেলো তিনি এখানকার বাসিন্দা না।
কথা বলার এক পর্যায়ে জানা গেল রুহুল ইসলামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার মহেষদি গ্রামে। পরিবারে স্ত্রী,
দুই মেয়ে ও এক ছেলে।
তাকে দেখেই ছোট ছোট শিশুরা দৌড়ে ছুটে আসে পতাকা নিতে। অথচ পতাকা বিক্রি তার পেশা নয়। মূলত তিনি একজন কৃষক । নিজের কোনো জমি না থাকায় বর্গাচাষি হিসেবে আখ চাষ ও অন্যান্য সবজি চাষ করে বিক্রি করেন। কিন্তু বছরের নির্দিষ্ট সময়ে তিনি দেশভ্রমণ করেন। আর সেটি শুধুমাত্র পতাকা বিক্রির জন্য।
২১ শে ফেব্রুয়ারি ও ১৬ ডিসেম্বরেই তিনি এ কাজটি বেছে নেন। ভাষা দিবস ও বিজয় দিবস তার কাছে অনেক তাৎপর্য্য বহন করে। তাই এই দুই দিবসের ৬ দিন আগেই রাণীশংকৈলে ছুটে যান। ৯ বছর ধরে তিনি পতাকা বিক্রির পেশায় রয়েছেন। এবং বছরের এই ১২ দিন তিনি ফরিদপুর থেকে রাণীশংকৈলে ছুটে আসেন। দেশকে অনেক ভালবাসেন, তাই বছরের ১২টি দিন তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
রুহুল ইসলাম প্রতিবেদককে জানান, শুধু ভালোলাগা থেকেই তার এ কাজ। এই বিশেষ দিনগুলো পতাকার অংশ। বাংলা ভাষা ও স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্যই তো মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। তাই ২১ শে ফেব্রুয়ারি ও ১৬ ডিসেম্বর উদযাপনের ছয়দিন আগেই তিনি তার পছন্দের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পৌঁছে যান।
তিনি আরও জানান, ১৬ ডিসেম্বর তার বয়সও ৫০ পূর্ণ হবে। আবার বাংলাদেশের বিজয়েরও ৫০ বছর পূর্তি। তাই দিবসটি উদযাপনে তিনি এবারও ঠাকুরগাঁও জেলাকে বেছে নিয়েছেন। কয়েকটা দিন এখানে ঘুরবেন আর পতাকা বিক্রি করবেন। যা আয় হবে, তা দিয়ে ছয়দিনের তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা হয়ে বাড়তি কি