সারোয়ার হোসেন,তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি: রাজশাহী তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ও বাধাইড় ইউপিতে চলতেই আছে ইউপি নির্বাচন পরবর্তী বিজয়ের উৎসব। নৌকা প্রতীক নিয়ে পরপর চেয়ারম্যান হওয়ার কারন এবং এক ব্যক্তি ও পরিবার থেকে ইউপির জনসাধারণ মুক্তি পাওয়ায় অবিরাম ভাবে চলতেই আছে বিজয়ী নৌকা প্রতীকের পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ও বাধাইড় ইউপির বিজয়ী আতাউর রহমানকে ঘিরে চলছে অবিরত সংবর্ধনা।
ইউনিয়নের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সামাজিক সংগঠন ,গ্রাম, ওয়ার্ড,দল থেকে নবাগত চেয়ারম্যানদের কে দিতেই আছেন সংবর্ধনা। এর অবশ্য যথেষ্ট কারনও আছে,পাঁচন্দর ও বাধাইড় ইউপি নির্বাচনের আগে উপজেলা আ”লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন এই দুই ইউপি আমাদের নিজস্ব পরিবারের মত।এখানে আমি রাব্বানী যাকেই ইচ্ছে তাকেই চেয়ারম্যান করতে পারি।এখানে কোন প্রতীক লাগবেনা।রাব্বানীই বড় প্রতীক।যার প্রেক্ষিতে রাব্বানী তার আপন ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম কে পাঁচন্দর ও ভাগ্নে রফিকুল ইসলাম কে মোটরসাইকেল প্রতীকে নৌকার বিরুদ্ধে ভেটের মাঠে নামিয়ে, করুন পরাজয় বরন করতে হয়েছে।
এবিজয়ের মাধ্যমে রাব্বানী পরিবারের একক আধিপত্য খর্ব হয়েছে বলে মনে করেন ইউপির ভোটারেরা।অবশ্য পাঁচন্দর ইউপি বাসী দাবি করেছিলেন নৌকার বিজয় ঘটিয়ে এক পরিবার থেকে ইউপিকে স্বাধীন করা হবে।হয়েছেও তাই। এজন্যই এত উৎসব আনন্দ ইউপি বাসীর মধ্যে।
জানা গেছে, চলতি মাসের গত ১১নভেম্বর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর তানোর উপজেলার ছয়টি ইউপির নির্বাচন।
এই নির্বাচনে পাঁচন্দর ইউপিতে ভোট করেন নৌকা মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন,মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রাব্বানীর ভাই শরিফুল ইসলাম। তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে ভোট করে পরাজিত হন।ওই ইউপিতে বিএনপির পাঁচন্দর ইউপির সাবেক সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মমিনুল হক মমিন চশমা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নৌকার প্রার্থী মতিন দ্বিতীয় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
ইউনিয়নের জনসাধারণ জানান,পাঁচন্দর ইউপির ভোট চ্যালেন্জিং হয়ে উঠে। সবার একটাই কথা ছিল কোন পরিবারের কাছে জিম্মি থাকবনা। ইউপিকে ব্যালটের মাধ্যমে স্বাধীন করা হবে।যার কারনেই বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে রাব্বানী পরিবারের আধিপত্য খর্ব করা হয়েছে। তারা আরো জানান অতীতের সবকিছু ভুলে মানুষ নৌকাকে বিজয়ী করতে এক কাতারে সামিল হন।নানা কৌশলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী নৌকার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েও তার ভাইকে বিজয়ী করতে পারেন নি।রাব্বানীর পরিবার মুন্ডুমালা পৌরসভার ভোটার।শুধুমাত্র শরিফুলকে ইউপির ভোটার করে রাখেন পাঁচন্দর ইউপির চেয়ারম্যান করার জন্য।
অপর দিকে বাধাইড় ইউপিতেও রাব্বানী তার ভাগ্নে রফিকুল ইসলাম নামের একজনকে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোট করতে নির্দেশ দেন।এই রফিকের দলে ইউপি তো দূরে থাক ওয়ার্ডের কোন সদস্যও না।
বাধাইড় ইউপির নেতাকর্মীরা জানান,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী মনে করেছিল তার কথায় সব ভোট হয়ে যাবে।মানে মানুষ এতই পাগল তার কথায় সব হবে।
নৌকার বিরুদ্ধে তাদের পারিবারিক প্রতীক নাকি মোটরসাইকেল। তারা যেটাই করবে ইউপি বাসী নাকি তাদের কথামত সবকিছু করবে।অতীতের কথা ভুলে যেতে হবে।আগামীতে নিজের জায়গা থাকবে কিনা।কারন তিনি ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাদেরকে আওয়ামী লীগ দেখতে চায় না।তারা যেন মোটরসাইকেল নিয়েই আজীবন থাকতে হয়। তাদের মুখরোচক কথাই মানুষ ভুলবেনা।
তারা মনে করত পাঁচন্দর বাধাইড় ইউপির জনসাধারণ তাদের উপরই শুধু আস্হা ভালোবাসা আছে,আর কারো উপরে নাই। কিন্তু দুই ইউপির জনগন ব্যালটের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছে তোমাদের দিন শেষ। ভোট নিয়ে আর বানিজ্যও হবেনা।এখন পাঁচন্দর বাধাইড় স্বাধীন।
বিজয়ী চেয়ারম্যান মতিন, আতাউর ইউপি বাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মানুষ বুঝতে শিখেছে। কারো বা কোন পরিবারের উপর আস্হাশীল নয়।সেটা ভোটের ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করেছেন।দলের সাথে বেইমানির ফল এমনই হয়।তাদের উচিত হবে রাজনীতির মাঠ থেকে সরে যাওয়া।মানুষ উন্নয়ন চাই,আর সে জন্য নৌকার বিকল্প নাই। পাঁচ বছরে ইউপির বাকি উন্নয়ন কাজ শেষ করে জনগনের সেবক হয়েই যেন দায়িত্ব পালন করি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সেবক হিসেবেই যেন কবুল করেন।এটাই প্রত্যাশা।