কানাইঘাট(সিলেট)প্রতিনিধিঃ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি অর্ধশতাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তপশীলে কানাইঘাট উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের নাম না থাকলেও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিরা গত কয়েক মাস থেকে তাদের নির্বাচনীয় এলাকায় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে উঠান বৈঠক, মতবিনিময়ের পাশাপাশি নির্বাচনী ব্যানার, বিলবোর্ড দিয়ে নিজেদের আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইতিমধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে দলকে সুসংগঠিক করার জন্য কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভায় জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যাকে মনোনীত করা হবে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা প্রদান করেন ।
তবে ৯ টি ইউনিয়নে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি হওয়ায় দলের নেতৃবৃন্দ এ নিয়ে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন । ইতিমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে মনোনয়ন প্রত্যাশিরা একে অন্যের বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের কাছে নালিশ জানানোর পাশাপাশি নিজেদের কর্মী সর্মথকদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় বেশ তৎপর রয়েছেন। তবে তৃনমূলের অনেক নেতাকর্মী জানিয়েছেন প্রার্থী বাছাই নিয়ে বেশ সমস্যা হতে পারে । যার কারণে দলে কোন্দলের পাশাপাশি অনেকে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন। তপশীল ঘোষনার পর ৯টি ইউনিয়নে সভা করে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।
জানা গেছে ইউনিয়ন নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে রয়েছেন,
১ নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নেঃ
উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক পাথর ব্যবসায়ী বর্তমান ইউপি সদস্য তমিজ উদ্দিন, বিগত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে অংশ গ্রহনকারী আলা উদ্দিন মড়াই, সাবেক ছাত্র নেতা ফারুক আহমদ,মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান নাজিম উদ্দিন।
২ নং লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নেঃ
বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা জেমসলিও ফারগুশন নানকা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শ্রী রিংকু চক্রবর্তী,ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য আলিম উদ্দিন, সিলেট বারের আইনীজীবি এডঃ হারিছ আহমদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রবাসী আনোয়ারুল হক।
৩ নং দিঘীরপাড় পূর্ব ইউনিয়নেঃ
বর্তমান চেয়ারম্যান ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি আলী হোসেন কাজল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোহিন চৌধুরী, ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত,প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
৪ নং সাতবাঁক ইউনিয়নেঃ
বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান, ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী মখদ্দুছ আলী, সাধারন সম্পাদক বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুন নূর, আওয়ামীলীগ নেতা আলী হোসেন।
৫ নং বড়বচতুল ইউনিয়নেঃ
ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুবশ্বির আলী চাচাই, উপজেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আফতাব উদ্দিন, ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান জাকারিয়া আলম জামিল।
৬ নং কানাইঘাট সদর ইউনিয়নেঃ
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল হেকিম শামীম, বিগত ইউপি নির্বাচনের নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হোসেন আহমদ,উপজেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক প্রভাষক আফসর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি মাষ্টার মামুন আহমদ, সিলেট মহানগর শ্রমিকলীগ নেতা এনামুল হক, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক আহমেদুল কবির মান্না, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমদ।
৭ নং দক্ষিন বানীগ্রাম ইউনিয়নেঃ
বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহমদ, ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন রশিদ, সাবেক ছাত্রনেতা আখলাকুল আম্বিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা বাবুল রানা।
৮ নং ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নেঃ
আওয়ামীলীগ নেতা বিগত ইউনিয়ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জালাল আহমদ,উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সায়েম আহমদ, সাবেক ছাত্রনেতা হারুনুর রশিদ, শিব্বির আহমদ ওসমানী।
৯ নং রাজাগঞ্জ ইউনিয়নেঃ
ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি বিলাল আহমদ,ইউপি আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা সাংবাদিক আলী আকবর চৌধুরী কুহিনুর,সিলেট জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল হালিম সাগর,আওয়ামীলীগ নেতা সুহেল রানা।
প্রচার-প্রচারণার দিক থেকে সকল প্রার্থী ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তারা আশাবাদী দলের তৃণমূলের ভোটে বিজয়ী হবেন। সেজন্য মাঠে সক্রিয় হয়ে কাজ করছেন। তবে অনেকে জানিয়েছেন দলীয় ভাবে মনোনয়ন না পেলে তারা নির্বাচন করবেন না। দল যাকে মনোনীত করে নৌকা প্রতীকি তুলে দেবে তার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। যাতে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হয়।
অপরদিকে অনেকে মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার অভিমত ব্যাক্ত করেন।