মইনুল হক মৃধা,গোয়ালন্দঃ সারাদেশের ন্যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় দ্বিতীয়ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউপি নির্বাচন। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার ২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে ইউপির অলি-গলি, বাসা-বাড়ি, চায়ের দোকান ও বিভিন্ন স্থাপনায়।
নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে কোমর বেঁধে নির্বাচনী মাঠে দিন-রাত সময় দিচ্ছেন। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ ইউনিয়নে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলায় চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা দলবেঁধে প্রচার প্রচারণায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। তারা অটোরিকশা, ইজিবাইক, ও রিকশায় মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
২টি ইউনিয়নে ৫ জন চেয়ারম্যান সহ ৮৩ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করছেন।
এ ইউপি নির্বাচনে ছোটভাকলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা পেয়েছেন মো. আমজাদ হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ আলী পেয়েছেন আনারস প্রতীক। ছোটভাকলা ইউনিয়নের সদস্য প্রার্থী ২৯জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী ১২জন সহ ৪৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ গ্রহন করেন। এ ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১৪,৮৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭,৫২৪ এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ৭,৩৩৩জন।
উজানচর ইউনিয়নে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন মো. গোলজার হোসেন মৃধা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ও ঘোড়া প্রতীক পেয়েছেন জিন্দার আলী। এ ইউনিয়নে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ সাধারন সদস্য ২৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৯ জন সহ মোট ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ২২,৫০৩জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১,৭২৬ জন ও মহিলা ভোটার ১০,৭৮৭ জন।
এদিকে সংরক্ষিত নারী সদস্যরা ২টি ইউনিয়নে মাঠে-ঘাটে কোমর বেঁধে অবিরাম প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী সময় ঘনিয়ে আসার সাথে ইউপিগুলোর বাজার, অলি-গলি, চায়ের দোকান, হোটেল, বিভিন্ন স্থাপনা ও বসত বাড়ির সামনে পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে। প্রার্থীরা সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অন্যান্য প্রার্থীরাও বলেন জনগণের ইচ্ছাতেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তাই জনগণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে জয় করবেন এ কামনা করছেন তারা।
এদিকে নারী প্রার্থীদের সাথে মাঠে নেমেছেন স্বামী সন্তানরাও। তেমনি পুরুষ প্রার্থীদের সাথেও স্ত্রী সন্তানরা বসে নেই। সবার আশা ভোট যুদ্ধে জিততেই হবে। তবে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেয়ার ব্যাপারে কোনও প্রার্থীকেই নিরাস করছেন না। প্রার্থীরা ব্যবসায়ী ভোটারদের দোকানে গিয়েও ভোট প্রার্থনা করছেন। শুধু তাই নয় মাঠে কর্মরত শ্রমিকদের কাছেও যাচ্ছেন ভোটের আশায়। দিচ্ছেন নানা ধরণের প্রতিশ্রুতি।
কুদ্দুসুল আলম নামে এক ভোটার জানান, ভোট আসলে প্রার্থীদের আনা-গোনার কমতি থাকে না। ভোট শেষ হলেই তাদের দেখা পাওয়া যায় না। প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়ে, সে মোতাবেক কাজ করে না। তারা নির্বাচনের পর সব ভুলে যান।
ভোটার রাসেল আহমেদ জানান, অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। কিন্তু ইউনিয়নের তেমন কোন উন্নয়ন হয় না।
উজানচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) মো.গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আমি নির্বাচিত হতে পারলে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করবো। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করাসহ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবো।
ছোট ভাকলা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আ’লীগের মনোনীত (নৌকা প্রতীকের) প্রার্থী মো. আমজাদ হোসেন বলেন, জনগণের ইচ্ছাতেই নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হয়েছি। এবারও জনগণের ইচ্ছাতেই প্রার্থী হয়েছি। আশাকরি জনগণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে আমাকে জয় করবে।
Post Views: 232