সবুজ সরকার বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সহকারী হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি ও শিক্ষক হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার দূর্ব্যবহারে উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সহ শিক্ষক-শিক্ষিকা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এব্যপারে প্রাথমিক শিক্ষকগণ জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেলকুচি উপজেলা শিক্ষা অফিস সহকারী হাফিজ উদ্দিন দুর্নীতিবাজ ঘুষঘোর নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। তিনি প্রায় বিভিন্ন কাজ নিয়ে আসা শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরন করেন এবং ধমকের সুরে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলে, তার এমন আচরনের কারনে বেশ কয়েকবার শিক্ষকদের সাথে মারমুখি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যা পরে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের হস্তক্ষেপে তা সাময়িক মিমাংসা করা হয়। ইতিপূর্বে একই অফিসের অফিস সহকারী হেলাল উদ্দিনের সাথে প্রশিক্ষণের পারিশ্রমিক টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সরাসরি মারপিটের ঘটনা ঘটে।
শিক্ষকের খাতের টিএ বিলের বরাদ্দর ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক মুসা আহমেদ ও আকতার জাহান, ১০ হাজার ৯ শত ২০ টাকা না জানিয়ে হাতিয়ে নেয়। ৬০ জন শিক্ষকের উচ্চতর পরীক্ষা পাশের সনদপত্র চাকুরী বহিতে লিপিবন্ধ করার জন্য প্রত্যেকে কাছ থেকে ৫ শত করে মোট ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। চাকরী স্থানীকরণের জন্য নব্য শিক্ষকদের কাছে থেকে জন প্রতি ৫ শত টাকা করে মোট ১ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন। শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদন বিলে শিক্ষক প্রতি ৫ শত টাকা আদায় করেন।
২০২০ সালে যোগদানকৃত ৯৫ জন শিক্ষকের জি.পি.এফ হিসাব খোলা বাবদ জন প্রতি ৫০০ টাকা করে নিয়েছেন অফিস সহকারী। সহকারী শিক্ষকদের সরকার ঘোষিত ১৩ তম গ্রেডের কাজ নিয়ে ১ হাজার টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করেন তিনি। এ ছাড়াও তার মোবাইল থেকে ফোন করে বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করেন। ইতিপূর্বে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান সহকারী হাফিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কথা বললে তাকেও মোবাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন অফিস সহকারী। পি ই সি পরীক্ষার ১৭ জন শিক্ষার্থীর ডি আর এর টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগকারীরা ব্যাতিত আরও একাধিক শিক্ষকরা জানান, বেলকুচি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী হাফিজ উদ্দিন ১০ বছর যাবত কর্মরত আছেন এ উপজেলায়। তার শ্বশুর বাড়ি এ উপজেলায় হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে এই সব অপকর্ম দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। যোগদান করার পর থেকেই তিনি ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করেন না। এতে করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে অফিস সহকারী হাফিজ উদ্দিন সাংবাদিকদের কাছে ঘুষের কথা অস্বীকার করছেন। আর শ্বশুর বাড়ির প্রভার খাটিয়ে কখনো অপকর্ম করেন নাই।
বেলকুচি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, অফিস সহকারী হাফিজ উদ্দিন শিক্ষকদের কাজে টাকা নেওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মন্ডল জানান, বেলকুচি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সহকারী হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।