নিউজ ডেস্কঃ পরীক্ষা শেষ। সবাই দোড় দিয়ে বাবা-মা বা নিজ অভিভাবকদের কাছে ফিরছেন। যার যে ব্যক্ত প্রকাশ করছেন।
তখন ওহিদুর ছোট্ট ছোট্ট করে দুই হাতে ভর করে ব্যস্ত ভিড়ের মাঝ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে। দুর থেকে বাবা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন তার হার না মানা বুকের মানিকের দিকে।
কথা বলছি, রাজশাহী থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা ওহিদুর রহমানের কথা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে হাঁটতে না পারলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
রোববার (১৭ অক্টোবর) ভর্তি পরীক্ষা শেষে দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়না চত্বরে এ দৃশ্যপট চোখে পড়ে।
বাবা আমিনুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই ওহিদুর অত্যন্ত দৃঢ় প্রত্যয়ী। সে অন্যদের মতো হাঁটাচলা না করতে পারলেও কখনো পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যায়নি। তার এ আগ্রহের জন্যই তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ওহিদুর রহমান এ বছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ‘এথ ইউনিটের অধীন অংশ নিয়েছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, তার স্বপ্ন ছিল ডেন্টালে পড়ার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেখানে সুযোগ পাননি। এখন তিনি চান রসায়নে উচ্চশিক্ষা নিতে।
‘আমি আমার ইচ্ছাশক্তির বলে এ পর্যন্ত এসেছি। আমার চারপাশে অনেককে দেখেছি প্রতিবন্ধিত্বের কারণে অকালে শিক্ষার আলো থেকে ঝরে যেতে। আমি চাই ভবিষ্যতে এ ধরনের মানুষদের জন্য যেন কাজ করতে পারি।থ
আলাপচারিতার মধ্যেই ছেলেকে হুইল চেয়ারে উঠিয়ে নেন বাবা আমিনুর রহমান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সৃষ্টিকর্তা যাকে যেমন খুশি সৃষ্টি করেন। এখানে কারও কোনো হাত নেই। আমার ছেলে যেন তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে এ দোয়া করবেন। এটুকুতেই আমার শান্তি।
কথা শেষ করেই হুইল চেয়ার ঠেলে এগিয়ে চললেন বাবা-ছেলে। আশপাশের সবাই কিছু সময়ের জন্য তাদের দিকে চেয়ে থাকেন। হয়তো তারা মনে মনে বলছিলেন, ‘ওহিদুর, তুমি থেমো না। এগিয়ে যাও।