রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন

নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে মোংলায় কবি রুদ্রের ৬৫তম জন্মবার্ষিকী পালন।

রিপোটারের / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১

এম এইচ শান্ত,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাট মোংলার মিঠাখালিতে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ১৬ অক্টোবর শনিবার কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লার ৬৫তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।

শনিবার সকাল ৯টায় রুদ্র স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে সংসদ চত্বর থেকে শোভাযাত্রা সহকারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে কবি রুদ্রের বাড়িতে দোয়ার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পরে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রীত মেহমানদের মঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।  বিকালে মিঠাখালী ফুটবল মাঠে অগ্রদূত ক্রীড়া চক্র ও ডেউয়াতলা ফুটবল একাডেমির সাথে এক প্রীতি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যা ৬টায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা শাখা ও রুদ্র স্মৃতি সংসদের যৌথ উদ্যোগে মোংলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।

রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি মিঠাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহামুদ হাসান ছোটমনি এর  সভাপতিত্ব ও মোল্লা আল-মামুন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার।

শুরুতেই রুদ্রের বিখ্যাত’ভালো আছি ভালো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানটি পরিবেশন করে কলতান শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দ ।

সভায় আরো আলোচনা করেন মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম সরোয়ার, রুদ্রের অনুজ সুমেল সারাফাত, মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা শাখার সভাপতি নূর আলম, গণশিল্পী সংস্থার সুভাষ বিশ্বাস, প্রবীন শিক্ষাবিদ জেমস শরৎ কর্মকার প্রমুখ ।

আলোচনা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি করেন কিশোর কুমার বাড়ই ও সাইদ খান। সংগীত পরিবশেন করেন আব্দুল জব্বার, জীবন, মিঠুন ও রুদ্রের গড়া সংগঠন অন্তর বাজাও।

সভায় বক্তারা বলেন, রুদ্র ছিলেন তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক। সমাজের সকল বৈষম্য, সাম্প্রদায়িকতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার। বুিদ্ধবৃত্তিক আপোষকামিতায় দেশ যখন আকন্ঠ নিমজ্জিত, সত্য যখন নির্বাসনে এই রকম অস্থির সময়ে রুদ্রকে আমাদের নিজেদের জন্যে, দেশের জন্যে খুব প্রয়োজন ছিল। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন রুদ্র তার কবিতা, গান নিয়ে বেঁচে থাকবেন।

প্রসঙ্গত, মাত্র ৩৫ বছরের নাতিদীর্ঘ জীবন-সীমায় রুদ্র রচনা করেন সাতটি কাব্যগ্রন্থ-‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯), ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১), ‘মানুষের মানচিত্র'(১৯৮৪), ‘ছোবল’ (১৯৮৭),  ‘গল্প’ (১৯৮৭) ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’ (১৯৮৮) এবং ‘মৌলিক মুখোশ'(১৯৯০)। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এছাড়া তিনি বেশ কিছু গল্প লিখেছেন।

তার রচিত ও সুরারোপিত  ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’- গানটি দুই বাংলায় অসম্ভব জনপ্রিয়। ১৯৮৭সালে তসলিমা নাসরীনের সাথে বিচ্ছেদের পর মোংলায় বসে তিনি এ গানটি রচনা ও সুরারোপ করেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর