শাহিনুর রহমান,তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নওগাঁ ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামে লোকজনদের কবরস্থানে দাফন-কাফনে বাধা, নামাজ পড়ার অপরাধে মসজিদে তালা ও খেলার মাঠে খেলতে বাধা দেয়ায অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও সহ বিভিন্ন দফতরে শতাধিক গ্রামবাসি স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গ্রামবাসির স্বাক্ষরিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার নওগঁা ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের ইদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে বাধা, পশ্চিমপাড়া ভূমি অফিস সংলগ্ন মালিপাড়া পাঞ্জেগানা ই – নূর- মসজিদে খুতবা দেওয়ার অপরাধে মসজিদ তালাবদ্ধ করা, কবরস্থানে মৃত ব্যক্তিদের দাফনে বাধা ও পশ্চিম পাড়ার ছেলেদের খেলার মাঠে খেলতে বাধা দিচ্ছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মালিপাড়া নিবাসী মোফাজ্জাল হোসেন সরকার,পূর্বপাড়া মসজিদের সভাপতি এমদাদুল হক আংগুর,মৃত মোকতার হোসেন বিশার ছেলে হেলাল সরকার,মৃত নজেম প্রামানিকের ছেলে মজেম প্রামানকি, মৃত জয়নাল সরকারের ছেলে নজরুল ইসলাস,মৃত আব্দুল আজিজুর রহমানের ছেলে জুব্বার হোসেনসহ অনেকে।
অভিযোগে মোতাহার হোসেন, লোকমান হোসেন, তাজ উদ্দিন, জাহাঙ্গীর প্রাং, আবুল কালাম, মোশারফ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা গাজী বেল্লাল হোসেনসহ শতাধিক ব্যক্তি বলেন, মালিপাড়া গ্রামটি পুর্ব-পশ্চিম লম্বা। গ্রামে একটি মসজিদ পুর্বপাড়ায় হওয়ায় প্রায় ১কিলোমিটার হেটে বৃদ্ধসহ সকল মুসুল্লিদের নামাজ পড়তে যেতে হয়। অনেক বৃদ্ধ মানুষ শুক্রবার জুম্মার নামাজ পরতে যেতে পারেন না। তাই গত ১০ বছর পুর্বে মালিপাড়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের লোকজন একটি মসজিদ নিমার্ন করেন। পরে সেখানে শুক্রবারের নামাজের খুতবা আদায়ের জন্য গ্রাম প্রধানের অনুমতি চান। কিন্তু সেখানে খুতবা আদায় করার জন্য কোন অনুমতি দেন না অভিযুক্ত ব্যক্তিগন। গত কয়েক মাস আগে এই মসজিদে খুৎবা পড়ানো হলে বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির যোগসাজসে হেলাল উদ্দিন, নজের প্রাং ও এমদাদুল হক আঙ্গুর মাষ্টার,জুব্বারসহ অনেকে এসে মসজিদটিতে তালা মেরে যান। পরে তাদের অনেক অনুরোধ করেও গত কোরবানীর ঈদে মসজিদের তালা খুলে দেয়ার জন্য বলা হলে মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও পূর্বপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি এমদাদুল হক আঙ্গুর মাষ্টার আমাদের অনুরোধ নাখোচ করে দেন। এক পর্যায়ে আমরা গ্রামের ২শতাধিক লোক নিয়ে আলাদা সমাজ করি।
বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাজ্জাল হোসেন ইদগাহ মাঠে নামাজ পরতে বাধা, পশ্চিমপাড়া পাঞ্জেগানা নূর- ই -মসজিদে খুতবা প্রদানে বাধা, কবরস্থানে মৃত ব্যক্তিদের দাফনে বাধা ও খেলার মাঠে ছেলেদের খেলতে দিচ্ছেনা। এছাড়া তারা ক্ষমতার দাফটে আমাদের লোকজনদের মারধরের জন্য বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নওগাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাজ্জাল হোসেন সরকার বলেন, গ্রামের কোন মসজিদে খুৎবা হবে কোন মসজিদে হবে না এটা সমাজ পতিরা সিদ্ধান্ত নেবে। এটা আপনাদের বিষয় না। প্রধানরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেটাই সঠিক। তারা যদি গ্রামের কথা না শুনে আলাদা সমাজ করে তাহলে তো বাধা দেয়া হবেই।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল করিম এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি বলেন, মসজিদে নামাজে বাধা, কবরস্থানে দাফনে বাধা ও খেলার মাঠে খেলতে বাধা দেয়ার অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্তদের বাধা না দিতে বলা হয়েছে। কারন মুসলমান হিসেবে ধর্মীয় কাজে বাধা দেয়া ঠিক হবে না। এরপরেও যদি তারা বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।