কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাটে কৃষক মুহাম্মদ আলী ছোটকাল থেকে বাবার সাথে কৃষি কাজে জড়িত ছিলেন। এরপর জীবনের তাগিদে তরুণ বয়সে পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে। সেখানে দীর্ঘ ৩৫ টি বছর শ্রমিকের কাজ করে দেশে ফিরে আসেন ২০১৬ সালের দিকে। দেশে এসেই আবারো কৃষি কাজ শুরু করেন। গবাদি পশু পালনের পাশাপশি বাড়ির আশপাশে নানা ধরণের সবজি চাষ শুরু করেন মোহামামদ আলী।
উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নজরে আসেন পরিশ্রমি প্রবাশ ফেরত কৃষক মোহামা্মদ আলী। কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীকে তার বাড়ির বিশাল উঠানে নানা জাতের উচ্চ ফলশীল মাল্টা গাছের বাগান করার পরামর্শ দিলে এতে মোহাম্মদ আলী রাজি হন। এরপর ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের রাজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে মাল্টা চাষ প্রদর্শনীর আওতায় কৃষি অফিসের তত্বাবাধনে মোহাম্মদ আলী তার বাড়ির উঠানে ২০ শতাংশ জমির উপর ৬০টি নানা উন্নত জাতের মাল্টা চারা রোপন করেন।
মোহাম্মদ আলীর পরিশ্রম আর কৃষি অফিসের তদারকিতে দুথবছরের মধ্যে চারা গুলো চোখ জুড়ানো এক মাল্টা বাগানে পরিনত হয়। সরেজমিনে কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউপির চটিগ্রামের মৃত ইছরাক আলীর পুত্র মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাগানে ফলনশীল মাল্টার গাছ গুলো বড় হয়ে প্রতিটি গাছে অসংখ্য বড় সাইজের মাল্টা ধরে ঝুলে আছে। মাঝে মাঝে রয়েছে দুথএকটি কমলার গাছ।
কমলার গাছেও ঝুলে আছে কমলা। কৃষক মুহাম্মদ আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, জীবনের সোনালী সময় টুকু প্রবাস কুয়েতে কাটিয়েছেন। দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে তেমন কিছু করতে পারেননি। দেশে চলে এসে ফের পুরানো পেশা কৃষি নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। ক্ষেতের জমিতে ধান চাষের পাশাপশি বসত বাড়ির আশপাশ এলাকায় সবজী বাগান,কলা বাগান,গবাদী পশুর খামার করেন।
কৃষি অফিসের পরামর্শে নিজের বাড়ির উঠানে মাল্টা বাগান করে গত বছর প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। এবছর এ পযর্ন্ত ২৫ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। বাগানে আরো ২৫-৩০ হাজার টাকার মাল্টা রয়েছে।
বিষ ও ফরমালিন মুক্ত অত্যান্ত সুস্বাদু মাল্টা তার বাগান থেকে অনেকে প্রতি কেজি ২ শত টাকা করে কিনে নিয়ে যান। পাশাপাশি আত্মীয় স্বজন সহ পাড়াপ্রতিবেশীকেও মাল্টা দিয়ে থাকেন। তিনি আরো জানান মাত্র ৫ বছর সময়ের ব্যবধানে আজ তার বাগানটি আশানুরুপ ফল দিচ্ছে। প্রতিটি মাল্টা গাছে ৫০-৬০ কেজি মাল্টা ধরে থাকে। কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞত।