সহিজল ইসলাম,রাজীবপুর(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে প্রায় ১৫ বছর আগে খোকা মিয়া ও খালেদা বেগমের বিয়ে হয়েছিলো। ৫ বছরের সংসার জীবনে দুটি সন্তানের জন্ম হয় ওই দম্পতির। এর পর পারিবারিক নানা কলহের কারনে খোকা মিয়া তালাক দেন তার স্ত্রীকে।বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় সেখানেও তালাকের মাধ্যমেই মিমাংসা হয়।
পরে দুই সন্তানকে নিয়ে বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করে খোকা মিয়া। সম্প্রতি তালাকপ্রাপ্ত আগের স্ত্রী পুনরায় তার সাথে সংসার করার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং বিভিন্ন ভাবে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। এতে খোকা মিয়া রাজি না হওয়ায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে এর প্রতিকার চান খালেদা বেগম।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুঠোফোনে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে খালেদাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়।এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান সহ তার কয়েকজন অনুসারী মিলে খোকা’কে বেধড়ক মারপিট করে খালেদা বেগমের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে।
এঘটনার খবর পেয়ে খোকার ভাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় উদ্ধার করে তাকে।
রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে চরনেওয়াজী গ্রামের ঘটনা।স্থানীয় ব্যক্তি ও থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন (ওরফে কারেন্ট আনোয়ার), খালেদা বেগম,ছবের আলী,কাইঞ্চা মিয়া ও জাবেদ আলীর বিরুদ্ধে চিলমারীর ঢুসমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে নির্যাতিত খোকা মিয়ার ভাই আব্দুল আওয়াল।
মারপিটে আহত খোকা মিয়া রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।বিয়ে না করায় খোকা’কে মারপিট করার বিষয়ে জানতে চাইলে মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন,খোকা ওই নারীকে পুনরায় বিয়ে করার জন্য নিজেই প্রস্তাব দিয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি জানার জন্য তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকা হয়েছিল। তাকে আমি মারধর করিনি।মেয়ের পরিবারের লোকজন হয়তোবা মারপিট করেছে।
এ বিষয়ে খোকা মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,আমি আবার বিয়ে কইরা পোলাপান নিয়া খুব সুখে আছি।ওই মহিলা আবার আমাক বিয়া করবার চায়।চেয়ারম্যানেক দিয়া প্রস্তাব দিছে।আমি রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান ও আরও কয়েকজন মিলা আমাক মাইরডাং কইরা ঘরে আটকায়া রাখছিলো।আমার ভাই ভাইস চেয়ারম্যান সাথে নিয়া আমাক উদ্ধার করে।
থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল আওয়াল বলেন,আমার ভাইয়ের পক্ষে আমি মামলার বাদি হইছি।চেয়ারম্যান জোর কইরা আমার ভাইয়েক বিয়া করাবার চায়।রাজি না হওয়ায় তাক মারপিট করছে।আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে ঢুসমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইফতেখার মোকাদ্দেম বলেন,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় নির্যাতিতকে উদ্ধার করা হয়ছে এমনটা শুনেছি।লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।