শাহীন আলম, দুর্গাপুর (রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শুধু একটিবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি বা ভিডিওকলে কথা বলতে চান ১০৪ বছর বয়সী বৃদ্ধা লক্ষ্মী রানী। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ করার কারণেই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দশরথ চন্দ্র কবিরাজের পুরো পরিবার। কারণ হিসেবে দশরথ চন্দ্র কবিরাজের স্ত্রী লক্ষ্মী রানী ১০৪ বছর বয়সী বলেন, তারা আওয়ামী লীগ করতেন তাই তাদের পরিবারের উপর এত ভয়াবহ নির্যাতন হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একনিষ্ঠকর্মী ছিলেন রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ৫নং ঝালুকা ইউনিয়নের ঝালুকা গ্রামের দশরথ চন্দ্র কবিরাজ। তাকে দশরথ মাস্টার নামেই চেনেন । মুক্তিযুদ্ধকালীন এলাকায় সংগঠক মুক্তিযুদ্ধ ছিলেন তিনি। এমনকি তার বড় ছেলে দীজেন্দ্র নাথ কবিরাজ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। দশরথ মাস্টার বেঁচে নেই এখন। কিন্তু বেঁচে আছেন তার ১০৪ বছর বয়সী স্ত্রী লক্ষ্মী রানী কবিরাজ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি সুধু একটিবার কথা বলতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকার সহ আরও প্রাবীণ্য আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীথরা জানান, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আজন্ম সৈনিক ছিলেন দশরথ মাস্টার। ছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা রাজশাহীর কৃতি সন্তান শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের একনিষ্ঠ সহচর ছিলেন দশরথ মাস্টার।শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০০৬ সালের ১৩ আগস্ট অনেকটাই বিনা চিকিৎসায় এবং অবহেলিত ভাবে মারা যান দশরথ মাস্টার। শুধুমাত্র আওয়ামীলী রাজনৈতি করার কারণে ২০০০ এবং ২০০১সালে দুই দফায় তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল বিএনপি জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। লুট করা হয় বাড়ির সোনা দানা পুকুরের লাক্ষ লাক্ষ টাকার মাছ। কেটে সাবাড় করা হয় বাগানের শত শত গাছ। দশরথ মাস্টারের পরিবারের ওপর চালিত ভয়াবহ নির্যাতনের খবর ওই সময়ে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হয়। দেশ-বিদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু টিকতে পারেনি বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনীদের সামনে। লাভ হয়নি থানা-পুলিশের আশ্রয় নিয়েও।
দশরথ চন্দ্র কবিরাজের পরিবারের ভয়াবহ নির্মম নির্যাতনের বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। সেই সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের বিরোধী দলের নেত্রী ছিলেন। বর্তমান শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সেই সময়ে নির্যাতিত অন্য পরিবারগুলোর সঙ্গে তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান দশরথ চন্দ্র কবিরাজের পরিবার। প্রধানমন্ত্রী কিছু আর্থিক সহায়তাও করে ছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যদি কখনো আমার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে আপনার পরিবার থেকে যে কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করবেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শুধু একটিবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি বা ভিডিওকলে কথা বলতে চান ১০৪ বছর বয়সী বৃদ্ধা লক্ষ্মী রানী। লক্ষ্মী রানী বলেন,প্রধানমন্ত্রী ভিডিওকলে আমার সাথে যদি অনুগ্রহ করে একটাবার কথা বলতো তাহলেও আমি মরলেও শান্তি পেতাম। হয়ত আমি যে কোন মুহূর্তে মরে যেতে পারি, আমি মরে গেলে আমার জীবনের ইচ্ছা অপুর্ণ থেকেই যাবে।