সোহেল হোসেন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফ্ফার বলেছেন,পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে আশানুরুপ চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
১০০ শয়্যার হাসপাতালে প্রতিদিন দ্বিগুণের বেশি রোগীকে সেবা দিতে হচ্ছে, তাই ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও সকল রোগীকে পরিপূর্ণভাবে সন্তুষ্ট করা সম্ভব হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), লক্ষ্মীপুরের মধ্যে আয়োজিত অনলাইনভিত্তিক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
‘
করোনা সংকটে স্বাস্থ্য সেবার সার্বিক চিত্র, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়: প্রেক্ষিত লক্ষ্মীপুর সদরথ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভায় করোনাকালীন সংকট মোকাবেলায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ, বাস্তবায়ন এবং চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সনাক, লক্ষ্মীপুরের সভাপতি প্রফেসর জেডএম ফারুকীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ আনোয়ার হোসেন।
সিভিল সার্জন বলেন, লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে যা খুব চ্যালেঞ্জিং। একাধিকবার লোকবলের চাহিদা দেওয়া স্বত্বেও পর্যাপ্ত লোকবল না পাওয়ায় সেবা প্রদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
করোনার স্যাম্পল কালেকশনে একজন সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টির আলোকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা রাখা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি অভিযোগ জানানোর জন্য সিভিল সার্জনের মোবাইল নাম্বার দেয়া হয়েছে। সেখানে লোকজন অভিযোগ জানালে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিভিন্ন সীমবদ্ধতা থাকা স্বত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দৈনিক গড়ে ৮০০ থেকে ১০০০ রোগীর সেবা প্রদান করা হচ্ছে, যা চলমান রয়েছে। কোন সেবাপ্রার্থী সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে এবং তৎক্ষণাৎ তাকে অবহিত করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টিআইবি চট্টগ্রামের ক্লাস্টার কোঅর্ডিনেটর মোঃ জসিম উদ্দিন স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশংসা করে বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যেসকল ভালো উদ্যোগ রয়েছে, নিশ্চয়ই লক্ষ্মীপুর তার গর্বিত অংশীদার।
সার্বিকভাবে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের আন্তরিকতার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। যদি আমরা আরেকটু আন্তরিক হই তাহলে নিশ্চয় কাংখিত মানের সেবা প্রদান করতে পারবো। তিনি লক্ষ্মীপুরের স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর জেডএম ফারুকী তার বক্তব্যে করোনাকালীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে চিকিৎসকদের অসামান্য অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, হাসপাতালে সেবা নিতে এসে রোগীরা যাতে কোন হয়রানীর শিকার না হয় এবং সঠিকভাবে তাদের কাংখিত সেবা পেতে পারে সে বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। তাছাড়া লক্ষীপুর সদর হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম চোখে পড়ার মতো, যার কারণে সেবাপ্রার্থীরা বিড়ম্বনার স্বীকার হন। তিনি এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
টিআইবি, লক্ষ্মীপুরের এরিয়া কোঅর্ডিনেটর মোঃ বিল্লাল হোসেন এর সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য ও স্বাস্থ্য বিষয়ক উপকমিটির আহবায়ক ডাঃ মোঃ সালাহ উদ্দিন শরীফ এবং উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সনাক সহসভাপতি পারভীন হালিম, সনাক সদস্য ও সহকারি অধ্যাপক সুলতানা মাসুমা ও ইয়েস দলনেতা শান্ত চন্দ্র পাল।