উল্লাপাড়া উপজেলা পদ্মা, যমুনা এবং এদের উপনদী দ্বারা বাহিত। এ উপজেলা ২৪ অক্ষাংচ ১২’ উত্তর সিরাজগঞ্জ অক্ষাংশ থেকে ২৪ অক্ষাংশ ২৬’ উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং ৮৯ অক্ষাংশ ২৫’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯ অক্ষাংশ ৩৫’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত। এ উপজেলার উপর দিয়ে করতোয়া, ফুলজোর, জপজাপিয়া ইত্যাদি নদী প্রবাহিত হচ্ছে।
এই উপজেলার প্রাণকেন্দ্র উল্লাপাড়া মডেল থানার পেছনে অবস্থিত ফুলজোর নদী। নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বিনোদনের অন্যতম স্থান। বর্ষায় বেড়েছে নদীর পানি। এখন এই নদীর পাড়ে গেলে চোখে পড়বে বন্ধু বা পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে এসেছেন অনেকে। নতুন রূপের এই নদী হয়ে উঠেছে নগরবাসীর বিনোদনের অন্যতম স্থান। উল্লাপাড়া শহরে নির্মল পরিবেশে প্রশান্তির নিশ্বাস নেওয়ার জায়গা তেমনটা নেই। ঘন বসতির এই শহরে মুক্ত জায়গায় নিশ্বাস নেওয়ার মতো কোনো স্থান নেই বলে এখানে আসেন অনেক মানুষ। কর্মব্যস্ততা ভুলে নিজেদের মতো করে একটু সময় কাটানোর জন্য। নৌকাভ্রমণে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন অনেকে। কেউ আসছে পরিবার–স্বজন নিয়ে। কেউবা আবার বন্ধুদের সঙ্গে। নদীর মনোরম পরিবেশে অবসর সময় কাটানোর স্থান হয়ে উঠেছে এই ফুলজোর নদীর পাড়। গতকাল বিকেলে আকাশ ছিল মেঘলা, সঙ্গে মৃদু বাতাস। বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে । নতুন পানিতে ফুলজোর নদী টইটম্বুর। দর্শনার্থীরা সেই পানিতে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকে দল বেঁধে গোসল করছে নদীতে নেমেছে। অনেকে দল বেঁধে পাড়ে বসে গল্প করছেন, অনেকে হাঁটছেন। নদীর এই রূপ দেখে খুশি স্থানীয়রা ও নদীপাড়ে ঘুরতে আসা মানুষেরা। সকালের সময় নদী পাড়ে মানুষ কিছুটা কম থাকলেও বিকেল গড়াতে বাড়ে মানুষের ভিড়।
নদীর এই রূপ দেখতে দর্শনার্থীদের দেখে হাসি ফুটেছে মাঝিদের। কারণ দর্শনার্থীদের অধিকাংশই নৌকায় নদী ভ্রমণ করতে আগ্রহী। নৌকায় ওঠার জন্য মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। থানা মোড়ের পিছন থেকেই নৌকাঘাট থেকে দর্শনার্থীরা ঘণ্টা হিসেবে নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়ান নদীর বুকে। ঘণ্টার ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে বিকেলে ভাড়া কিছুটা বেশি দাবি করেন মাঝিরা।
নদীর এই রূপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই এই স্থানটিকে জিরো পয়েন্ট হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। খানিকটা প্রশান্তির পরশ পেতে এ স্থানে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ঘুরতে আসেন সময়ে-অসময়ে।
শুধু প্রেমিক যুগলরাই এখানে আসেন না, এখানে মধ্য বয়সী, শিশু, বৃদ্ধ সব শ্রেণির মানুষ প্রশান্তির পরশ বুলাতে ভিড় করেন। দোকানিরাও বিভিন্ন ধরনের খাবার পরিবেশনে দোকান সাজিয়ে বসেন। দোকানিদের বেচা বিক্রিও বেশ ভালো হয় মানুষের পদচারণায়। ভালোলাগার কারণে সন্ধ্যা হয়ে আসলেও এখানে সময় কাটাতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের। পরিবার নিয়ে একদিনের স্বাস্থ্যকর সফরে বিভোর হওয়ার নাম এই ফুলজোর নদীর জিরো পয়েন্ট। কৃত্রিম ও অকৃত্রিম দৃশ্যে অভিনব। নদী নদী করে নেচে ওঠা মন নদী তীরে পায়চারি করে পুলকিত হয়। মধ্যরাত পর্যন্ত ঘোরার পরিবেশ নেই বলে পর্যটকরা সন্ধ্যা রাতেই ঘরে ফেরেন। খুব শিগগিরই এই জিরো পয়েন্ট কে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠবে এমনটাই প্রত্যাশা ভ্রমণ পিপাসুদের।