সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভ্রাম্যমাণ চালকলের কদর বেড়েছে স্বাস্রয় মুল্যে ধান ভাঙ্গানো যায় বলে গ্রামাঞ্চলের মানুষ ঝুকে পড়েছে। মানুষের কাছে দিন দিন ভ্রাম্যমাণ চালকল জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এতে কদর কমে যাচ্ছে স্থাপন করা রাইসমিলগুলোর।
ভ্রাম্যমাণ চালকল মালিকরা ফোন করলেই কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৩৫-৪৫ টাকা মণ দরে ধান ভাঙ্গিয়ে দিচ্ছেন।এতে ভ্রাম্যমাণ চালকলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কৃষকের এক দিকে যেমন স্বাস্রয় মূল্যে ধান ভাঙ্গাতে পারছে অন্য দিকে বেঁচে যাচ্ছে পরিবহনের খরচ।সব মিলে গ্রামাঞ্চলের কৃষক ভ্রাম্যমাণ চালকলের প্রতি ঝুকে পড়ছে।
এ বিষয়ে উপজেলার রাঘববাড়িয়া গ্রামের মাওলানা হায়দার আলী জানান ভ্রাম্যমাণ চলকলে ধান ভাঙ্গাতে বেশি সুবিধা পেয়ে গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ ভ্রাম্যমাণ চালকলের অপেক্ষায় থাকে।রাইসমিলে গিয়ে ধান ভাঙ্গানোর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়।এটাতে তা করতে হয় না।ফোন করলে চালকল মালিক যথা সময়ে বাড়িতে এসে ধান ভাঙ্গিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন।
পশ্চিম বংকিরাট গ্রামের জাহানার বেগম জানান আগে ধান সিদ্ধ ও শুকানোর পর বস্তায় ভরে ভ্যান/ নৌকা যোগে রাইসমিলে পাঠাতাম ভাঙ্গানোর জন্য। সাথে দিতে হতো দুই/তিন জন লোক।এতে বেশি সময় ও পরিবহন খরচ লাগতো। এখন খোলায় বা বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ চালকলের মালিককে ফোন করা মাত্র এসে ধান ভাঙ্গিয়ে দিয়ে যায়।এ জন্য ভ্রাম্যমাণ চালকল মানুষের কাছে এতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতকান্দি গ্রামের রুহুল আমিন জানান আগে ভ্যান যোগে সলপ স্টেশনের রাইসমিলে গিয়ে ধান ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসতাম।এতে এক দিকে যেমন সময় অপচয় ও পরিশ্রম বেশি হতো,তেমনি খরচের পরিমানটাও বেশি হতো। এখন গ্রামে গ্রামে কৃষকের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ চালকল ধান ভাঙ্গিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।এতে খরচ ও পরিশ্রম কম হচ্ছে।প্রতিমণ ধান থেকে চাল বানাতে খরচ হচ্ছে ৩৫-৪৫ টাকা করে।চালের মানও ভালো হচ্ছে।এ জন্য কৃষক ভ্রাম্যমাণ চালকলের দিকে ঝুঁকে পরছে কৃষক।
এ বিষয়ে কাজিপাড়া গ্রামের ভ্রাম্যমাণ চালকল মালিক আবু জাফর জানান নিজ গ্রাম ও প্রতিবেশী গ্রামে অনেক লোকজনের কাছে আমার মোবাইল নাম্বার দেয়া আছে। যে কোন লোকের ধান ভাঙ্গানোর প্রয়োজন হলে আমার মোবাইল নাম্বারে ফোন করে।তখন আমি আমার তিন চাকা বিশিষ্ট ভ্রাম্যমাণ চালকল নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে ধান ভাঙ্গিয়ে দিয়ে আসি।দুরত্ব বুঝে প্রতিমণ ধান ভাঙ্গানোর দাম নির্ধারন করা হয়।কাছে গেলে ৩৫ টাকা, দুরে গেলে ৪৫ টাকা মণ দরে ধান ভাঙ্গিয়ে দিয়ে আসি।প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। আমার ভ্রাম্যমাণ চালকলটিতে ৩২ হর্সের ইঞ্জিন ব্যবহার করেছি।এতে সুন্দর মানের পরিষ্কার চাল পাচ্ছে কৃষক। যার করনে ভ্রাম্যমাণ চালকলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ জানান, ভ্রাম্যমান চালকল এখন গ্রামীন জনপদের কৃষক পরিবারগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে কিছু বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। কৃষক পরিবারগুলো ধান ভাঙ্গানোর ঝামেলা অনেকটা মুক্ত হয়েছেন।