সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিলে পানি না থাকলেও উপজেলার উত্তরাঞ্চলের জনগন জলাবদ্ধতার কারনে পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। এমনটি ঘটেছে উপজেলার তালম ইউনিয়নের ১১টি গ্রাম সহ পাশ্ববর্তী উপজেলা সিংড়ার ১০টি গ্রামে। এ সকল গ্রামের জনগনের নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জন দুভোর্গ।
কয়েক দিনের বৃষ্টির বর্ষনে এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি প্রবাহিত ভদ্রাবতী নদীর মাঝে মাঝে স্থাপিত অবৈধ সুতি জালের বাধায় পানি বের হতে না পেরে আবাদী জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। রাস্তাঘাট গেছে পানির নিচে।
বসত বাড়ির উঠানে পানি উঠে বেরেছে সাপ ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব। বসত বাড়ীর দেওয়াল ভেঙ্গে পরেছে পানির মধ্যে। পুকুরের মাছ বের হওয়ায় আশঙ্কায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন মাছ চাষীরা। রোপা আমন ধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়েছে। পারছেনা বিচনের চারা দিতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার মানুষের দুভোর্গ। কলামুলা ভাদাই ব্রীজ থেকে শুরু করে তালম নাগোড়পাড়া পর্যন্ত ভদ্রাবতী নদীর মাঝে মাঝে ১১টি সুুতি জালের বাধ। এই সুতি জালের বাধে পানি প্রবাহিত হতে না পেরে এলাকার জমিসহ রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। বার বার সুতি জাল মালিকদের সমস্যার কথা বললেও তারা কোন কর্নপাত করেন নাই। সুতি জাল মালিকগন প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার খেটে খাওযা জনগন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারছেন না বলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পানিতে বসতবাড়ি ভেঙ্গে যাওয়া এক ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান রেজাউল করিম জানান, প্রায় ১ মাস যাবত এই পানিতে আমার ঘরবাড়ী ডুবে থাকায় দেওয়াল ভেঙ্গে পরেছে। আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। এ ছাড়াও আমার মতো আরও অনেক বাড়ি ঘর পানিতে ডুবে আছে।
কলামুলা গ্রামের বেল্লাল হোসেন বলেন, এই পানির কারনে এক আবাদ নষ্ট হয়েছে। সামনে রোপা ধান রোপন করবো। আমরা কোন ভাবেই বিচন চারা দিতে পারছি না। এই পানি যদি না নামে তাহলে রোপা ধান রোপন করা হবে না। আমরা না খেয়ে মরবো।
কোলাকুপা গ্রামের ফিরোজ উদ্দিন বলেন, সুতি জালের বাধায় পানি নামতে না পেরে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পারাপারে কলা গাছরে ভেলা তৈরী করে পরিবারের সদস্যরা পার হচ্ছি। এভাবে আর কতদিন চলতে হবে জানি না।
ওই এলাকার মোস্তাব আলী বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী চলনবিলে এখন গরু , বাছুর, ছাগল, ভেড়া ঘুরে ঘুরে ঘাস খাচ্ছে আর আমাদের উচু এলাকায় পানিতে ডুবে হাবুডুবু খাচ্ছি। পানি বের করতে হলে প্রসাশনের হস্তক্ষেপে সুুতি জাল উচ্ছেদ করতে হবে। তবেই আমরা রক্ষা পাবো।
এই বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস-উজ-জামান বলেন, কতিপয় ১০ থেকে ১১জন লোকের সুবিধা দেখতে গিয়ে আমি তো বৃহৎ স্বার্থ ক্ষতি হতে দেব না। এলাকায় এই সুতি জালের কারনে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এটা অতি তাড়াতাড়ি উচ্ছেদ করতে হবে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মশগুল আজাদ বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। সুতি জাল দিয়ে মাছ ধরা সম্পন্ন নিষেদ।সুতি জাল উচ্ছেদের অভিযান চলমান আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল করিমকে ফোন দিলে ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায় নি।