উল্লাপাড়া পাটবন্দর-সলপ রেলওয়ে স্টেশন সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর উল্লাপাড়া অফিসের কাছে আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত পাকা হয়নি এই রাস্তাটি।
পাকাকরণের অভাবে উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন ও উল্লাপাড়া পৌরসভার প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষ দুভোর্গ পোহাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে পুরো অংশ জুড়ে কাদায় পরিপূর্ণ থাকে এই রাস্তা।
৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাঁচা সড়কে এক হাঁটু কাদা মারিয়ে চলতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ফলে এই পথে চলাচল এখন দূরহ হয়ে পড়েছে। এলাকার লোকজনকে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে চলতে হচ্ছে এই পথে। বিশেষ করে এই রাস্তায় চলাচল করতে বেশি কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে।
স্থানীয় বেতবাড়ী গ্রামের আব্দুল লতিফ, এনামুল হক দুলাল, শফিকুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান মাস্টার ও পূর্ব সাতবাড়িয়ার গ্রামের আনোয়ার হোসেন, এই পথে চলা শিক্ষার্থী বিজলী খাতুন, আব্দুল আলিম ও জেরিন জানান,
এই কাঁচা সড়কে প্রতিদিন বেতবাড়ী, পূর্ব সাতবাড়িয়া, রামকান্তপুর, চর সাতবাড়িয়া, বেতকান্দি, বড় লক্ষীপুর, ছোট লক্ষীপুর, উল্লাপাড়া পৌরসভাসহ প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন।
এসব গ্রামের দেড় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এই সড়ক হয়ে প্রতিদিন উল্লাপাড়া পৌরশহরে অবস্থিত সরকারি আকবর আলী কলেজ, উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজ, মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল, উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, এইচ. টি. ইমাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, উল্লাপাড়া সানফ্লাওয়ার স্কুল ও উল্লাপাড়া কামিল মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে থাকে।
বর্ষা বৃষ্টির দিনে এক হাঁটু কাদা জমে থাকে। রাস্তার মাঝে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়।
এ অবস্থায় এই রাস্তায় যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের দুভোর্গ তখন চরমে ওঠে। বেশির ভাগ দিনে অনেক শিক্ষার্থী রাস্তার কাদার মধ্যে পড়ে গিয়ে জামা কাপড় খাতা বই সবই ভিজিয়ে ফেলে।
উল্লিখিত গ্রামগুলোর উৎপাদিত কৃষি পণ্য উল্লাপাড়া বাজার, বন্যাকান্দি হাট ও সলপ রেলওয়ে স্টেশন বাজারে পরিবহনের জন্য উল্লাপাড়া পাটবন্দর-সলপ স্টেশন রাস্তাটি ব্যবহৃত হয়।
তারা আরো জানান, গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে সেখানে এ্যাম্বুলেন্স নেবার মত কোন অবস্থা নেই। অনেক সময় রোগীদেরকে হাসপাতালে নিতে বিলম্ব হলে রাস্তাতেই তাদের মৃত্যু হয়। আর এসব কারণে রাস্তাটি পাকা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে এলেও তা কোন কাজে আসছে না।
এ ব্যাপারে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি পাটবন্দর-সলপ রেলওয়ে স্টেশন কাঁচা সড়কে এলাকাবাসীর চলাচলের দুভোর্গের কথা স্বীকার করেন।
চেয়ারম্যান বলেন, ইতোমধ্যে তিনি রাস্তাটিকে দু’টি অংশে ভাগ করে পাকাকরণের প্রকল্প প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। অনুমোদিত হলে কাজ শুরু করবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উল্লাপাড়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, ইতোমধ্যে তিনি উক্ত সড়কের দুরাবস্থার কথা শুনেছেন। দ্রুত তদন্ত করে রাস্তাটি পর্যায়ক্রমে পাকাকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন এই প্রকৌশলী।