রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীতে বিষক্ত ইন্জিজশনে এক যৌনকর্মী ফারজানা আক্তার মুন্নি(২৬)’র মৃত্যু হয়েছে। ওই যৌনকর্মীর কথিত স্বামী রাশেদ খানের পুস করা স্যালাইনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
জানা যায় রোববার(১৩ জুন) দুপুর ২ টার সময় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুন্নির মৃত্যু হয়। ফারজানা আক্তার মুন্নি দীর্ঘদিন হলো দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে বসবাস করছে।কথিত স্বামী রাসেদ খান যৌন ক্ষুদা মেটাতে তার কাছে আসা-যাওয়া করত। এ সুবাদে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় মুন্নির উপার্জিত টাকা হাতিয়ে নিতেন তার কথিত স্বামী রাসেদ। যৌনকর্মী মুন্নি তার সর্বস্ব হারিয়ে তাকে বিয়ে করে অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তির ইচ্ছা প্রশন করে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এ জন্য কথিত স্বামী যখন যা চাইতো তাই নির্বিগ্নে দিয়ে দিতো। ক’মাস আগে তিন লক্ষ টাকা নগদ দিয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ের পিড়িতে বসে, রাসেদ মুন্নির দম্পতি জীবন শুরু করে। বিয়ের পর যৌনকর্ম ছেড়ে দিয়ে অন্য মেয়েদের মতো স্বামীকে নিয়ে সুখের ঘর বেধে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চায়। এই চাওয়াটাই তার জীবনের কাল হয়ে চির নিদ্রায় স্বায়িত হলো। নিহত মুন্নির স্বামী রাসেদ চায় তার স্ত্রীকে দিয়ে যৌনপেশা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করতে। এই চাওয়া পাওয়া নিয়ে তাদের মতোনৈক্যের সৃষ্টি। স্বামীস্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় কলোহ ঝগড়া বিবাদ।
মুন্নিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া একাধিক ব্যাক্তি অসুস্থ্য মুন্নির বরাত দিয়ে জানান, রোববার ভোরে স্ত্রীর শরীর দুর্বলতার জন্য রাসেদ নিজেই ভিটামিন স্যালাইন পুশ করে মুন্নির দেহে। কিছুক্ষনের মধ্যে মুন্নির শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। এসময় রাশেদ খান মুন্নির ব্যবহার করা মোবাইল ফোনসহ ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় মুন্নিকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার আরোও অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুন্নির মৃত্যু হয়। মুন্নি ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে।রাসেদ খান পাবনা সদর থানার শনিরদিয়া ভবানীপুর গ্রামের ছলিম খানের ছেলে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নিতাই চন্দ্র জানান, প্রথমে ওই রোগীকে মারামারির রোগী হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সময় বাড়ার সাথে সাথে তার শরীরে বিষক্রিয়ার উপস্বর্গ ধরা পরে। এক পর্যায়ে তারা নিশ্চিত হন ভর্তিকৃত রোগীর শরীরে বিষাক্ত ইনজেশন পুশ করা হয়েছে। এ জন্যই তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে এক যৌনকর্মীর মৃত্যুর খবর মৌখিক ভাবে শুনেছেন। ঘটানা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে।